এই সময়: বীরভূমে কেষ্ট–কাজল বিরোধে দাঁড়ি টানতে এ বার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই সক্রিয় হলেন। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরের কর্মিসভা থেকে তাঁর কড়া নির্দেশ, কাজল শেখকে নিয়েই রাজনৈতিক–পথ চলতে হবে অনুব্রত মণ্ডলকে (কেষ্ট)। সেই সঙ্গে বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় এবং রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কেও যে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে, সে বার্তাও মমতা দিয়েছেন অনুব্রতকে (কেষ্ট)। ভোটার তালিকা থেকে ভূতুড়ে ভোটারদের চিহ্নিত করতে এ দিন রাজ্যস্তরের একটি কমিটি গড়ে দিয়েছেন মমতা।
তবে সেই কমিটিতে বীরভূমের কাউকে রাখেননি তিনি। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘বীরভূমকে রাখিনি এই কমিটিতে। তার কারণ ওখানে কোর কমিটি আছে।’ এরপরেই সভাস্থলে বসে থাকা অনুব্রতকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, ‘কেষ্ট, কাউকে কিন্তু বাদ দেওয়া যাবে না। কাজলকেও কনফিডেন্সে নিতে হবে। আশিসদা, শতাব্দীকেও মাঝে মধ্যে ডেকে নেবে। সবাই মিলে কাজ করবে।’ দলের শীর্ষ নেত্রীর নির্দেশ শুনে ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানান কেষ্টও।
অনুব্রতকে সিবিআই গ্রেপ্তার করার পরে ২০২৩–এর মার্চ মাসে বীরভূম জেলায় সাংগঠনিক কাজ চালানোর জন্য ৯ সদস্যর একটি কোর কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী। পরবর্তীতে কমিটিতে কিছু রদবদল হলেও বীরভূম জেলা তৃণমূলের লাগাম এখনও কোর কমিটির হাতেই। তবে গত বছর সেপ্টেম্বরে অনুব্রত জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে জেলা তৃণমূলে সমীকরণ বদলাতে শুরু করে। কেষ্ট–ঘনিষ্ঠরা ফের সক্রিয় হয়ে ওঠায় প্রায়ই বীরভূমে তাঁদের সঙ্গে কাজল শেখ অনুগামীদের গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। সূত্রের খবর, বিষয়টি মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না তৃণমূল সুপ্রিমো।
তিনি চাইছেন, ২০২৬ বিধানসভা ভোটে গোটা তৃণমূল ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করুক। সেখানে বীরভূমে কেষ্ট বনাম কাজলের লড়াইয়ের খবরে তিনি যে বিরক্ত তাতে কোনও সন্দেহ নেই। রাজনৈতিক মহলের মতে, কাজল শেখকে সঙ্গে নিয়ে চলতে বলে আদপে মমতা এ দিন ভরা সভাতে কেষ্টকেই সতর্কবার্তা দিয়েছেন।