পার্থ চৌধুরী: পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের শতাব্দীপ্রাচীন কালী। খুবই জাগ্রত হিসেবে খ্যাত। মাঠের কালী পুজো। এবছরও অনুষ্ঠিত হল বিপুল ভক্তসমাগমের মধ্য দিয়ে। প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের অমাবস্যায় এই পুজো হয়। লক্ষাধিক ভক্তের উপস্থিতি দেখা যায়। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, দেবী রক্ষাকালীরই আরেক রূপ হলেন মাঠের কালী, যিনি তাঁদের সকল বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেন এবং মহামারী থেকে দূরে রাখেন।
এই পুজোর বিশেষত্ব হল, একই দিনে প্রতিমা নির্মাণ, পুজো এবং বিসর্জন সম্পন্ন হয়। শোভাযাত্রার মাধ্যমে দেবীকে পুজোর স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। ভক্তেরা সেখানে বিশাল আকৃতির ছাতা ধরে রাখেন। লোককথা অনুযায়ী, দেবী এতই জাগ্রত যে, কেউই তাঁর বেদিতে বসে সাধনা করার সাহস দেখাতে পারেননি। অতীতে বহু সাধক চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
প্রতি বছর এই পুজোয় বিরাট জাঁকজমক হয়। মনস্কামনা পূরণের পর অনেক ভক্তই মায়ের কাছে দণ্ডী কেটে তাঁদের প্রতিশ্রুতি পালন করেন। দেবীর ভোগ প্রস্তুত হয় বুড়ো শিবের মন্দিরে। সেখান থেকেই প্রথমে দেবীর কাছে ভোগ যায়। তারপর দেবীর আশীর্বাদ নিয়ে সেই ভোগ আবার বুড়ো শিবের জন্য নিবেদন করা হয়।
বর্তমানে দেবীর বেদি ঘিরে রাখা হয়েছে। যেখানে নির্দিষ্ট পুরোহিত ও উদ্যোক্তারা ভক্তদের পুজো নিবেদন করার ব্যবস্থা করেন। পুজো উপলক্ষে বিশাল মেলার আয়োজন করা হয়। যেখানে মহিলা ও পুরুষ ভক্তদের জন্য আলাদা কাউন্টার থাকে। ভক্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিসের কড়া নজরদারিও থাকে পুজোপ্রাঙ্গণে।
ভক্তদের বিশ্বাস, মাঠের কালীর কাছে প্রার্থনা করলে তা কখনও অপূর্ণ থাকে না, আর তাই প্রতি বছর এই পুজো ঘিরে উন্মাদনা থাকে তুঙ্গে।