স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে চুয়াড় বিদ্রোহের নেত্রী রানি রানি শিরোমণির ইতিহাসকে স্থান দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছিল আগেই। এই দাবি করেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বাসিন্দারা। রানি শিরোমণির গড়কে রাজ্যের হেরিটেজ কমিশন প্রত্নতাত্ত্বিক মর্যাদা দেওয়ার পরে এই দাবি জোরালো হয়। এ বার এই দাবি পূরণ করার আশ্বাস দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শুক্রবার, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবানিতে প্রাইমারি স্কুলের ৪০তম রাজ্য বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করতে এসে এই আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনি ব্লকের কর্ণগড়েই রানি শিরোমণির গড়। মেদিনীপুর শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে কর্ণগড় থেকেই, দ্বিতীয় চুয়াড় বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রানি শিরোমণি। এলাকার কৃষক এবং অন্যান্যদের সংগঠিত করে, ১৭৮৮-৮৯ সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। সেটাই পরিচিত চুয়ার বিদ্রোহ নামে। এ দিন প্রাইমারি স্কুলের রাজ্য স্তরের যে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে তার মঞ্চও করা হয়েছে শিরোমনির গড়ের আদলে।
ওই মঞ্চে দাঁড়িয়েই রানি শিরোমণি যেভাবে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন সেই কথাও উল্লেখ করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানান, রানি শিরোমণির ইতিহাসকে ইতিহাস বইয়ের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয় নিয়ে রাজ্যের সেচমন্ত্রী তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং-এর বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার সঙ্গে তার আলোচনা হচ্ছিল। রানি শিরোমণির বিষয়টি ইতিহাস বইয়ে রাখার জন্যেও তিনি আবেদন করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে এই বিষয়টি সিলেবাস কমিটির কাছে পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানান ব্রাত্য বসু।
পরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিরোমণির বীরত্বের ইতিহাস পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে এর আগে কুণাল ঘোষও আমার কাছে আবেদন করেছিলেন। একই কথা বলেছেন মানস ভুইয়াও। এই বিষয়টি যাতে ইতিহাসের পাঠ্যক্রমে স্থান পায় তার জন্য আমি সর্বোতভাবে চেষ্টা করব।’
মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিরোমণির নামাঙ্কিত ট্রেন চালু করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে তিনি শিরোমণির গড়ের উন্নয়নের জন্য কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। আমরাও আশাবাদী যে শিরোমণির ইতিহাস এ বার পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হবে। ’