• ফের যাবদপুরের অন্দরে বামেদের জয়জয়কার, উড়ল লাল আবির! কারণটা কী?
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০১ মার্চ ২০২৫
  • বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে প্রাপ্তির ঝুলি শূন্য হলেও যাদবপুর বিশ্ববিদ‍্যালয়ের অন্দরের একটি লড়াইয়ে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখল বামেরা। আবারও সেখানে উড়ল লাল আবির!

    আসলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এমপ্লয়িজ কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটির নির্বাচন ছিল। সেই ভোটাভুটিতে শাসক পক্ষকে বিপুল ব্যবধানে পরাস্ত করলেন বামপন্থী প্রার্থীরা। হিসাব বলছে, জয়ের এই ব্যবধান হল, ৫১-৭! অর্থাৎ, বামেদে কাছে ৪৪টি আসনে পরাজিত হতে হয়েছে শাসকপন্থীদের।

    লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এই যাদবপুরেই শনিবার বসছে তৃণমূল কংগ্রেসপন্থী অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপা-র বার্ষিক সাধারণ সভা। সেই সভায় উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেই কর্মসূচি ঘিরে আয়োজনও নেহাত কম হচ্ছে না। তার ঠিক আগের দিনই বামেদের হাতে শাসকপন্থীদের এমন পরাজয় যথেষ্ট অস্বস্তিকর বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

    বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানকার এই কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি চালান এখানকারই অধ্যাপক ও শিক্ষাকর্মীরা। শেষ এই সোসাইটির নির্বাচন হয়েছিল ২০১৬ সালে! অভিযোগ ছিল, ইচ্ছা করেই এখানে নির্বাচন করতে দেওয়া হচ্ছিল না। যদিও ২০১৬ সালেও এই সোসাইটির ভোটে বামেরাই জিতেছিল।

    কিন্তু, রাজ্যের বর্তমান প্রেক্ষাপট ২০১৬ সালের তুলনায় অনেকটাই বদলে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রায় ৮-৯ বছর বাদে হওয়া এই নির্বাচনে বামেরা তাদের গড় রক্ষা করতে পেরে স্বভাবতই খুশি। তাদের নির্বাচনী প্রতীক ছিল 'করমর্দন'। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসপন্থীদের প্রতীক ছিল 'মঙ্গল ঘট'!

    বাম সমর্থিত সমবায় বাঁচাও মঞ্চের পক্ষ থেকে পার্থপ্রতিম রায়কে উদ্ধৃত করে টিভি নাইন বাংলা-র অনলাইন পোর্টালে লেখা হয়েছে - 'দীর্ঘদিন ধরে ভোট আটকে কো-অপারেটিভের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু, বিশ্ববিদ্য়ালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও আধিকারিকরা বুঝিয়ে দিলেন যে তাঁরা তাঁদের সংরক্ষিত অর্থ সুরক্ষিত হাতেই রাখতে চান। আগের ভোটেও বামেরাই আধিপত্যের সঙ্গে জিতেছিল।'

    শুক্রবার ভোটের ফল প্রকাশিত হতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন বাম নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা। তাঁরা ক্যাম্পাসের ভিতর মিছিল করেন এবং লাল আবির মাখিয়ে পরস্পরকে জয়ের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান।

    প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে বাম মনোভাবাপন্নদের আধিপত্য নতুন কিছু নয়। রাজ্য ও দেশের রাজনীতিতে যে বদল এসেছে, তার আঁচ যে একেবারেই যাদবপুরের এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যন্ত পৌঁছয়নি, তা নয়। তবুও বামেদের প্রবল প্রভাব এখান থেকে মুছে ফেলা যায়নি।

    সূত্রের দাবি, শনিবার ওয়েবকুপা-র বার্ষিক সম্মেলন বা সভা উপলক্ষে শিক্ষামন্ত্রী এখানে এলে তাঁর সামনেই নানা ইস্যু তুলে ধরে বাম ছাত্র সংগঠনগুলি বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে। সেই প্রস্তুতির মধ্যেই শুক্রবারের এই জয় যাদবপুরের বামপন্থী ছাত্র ও যুবদের বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)