• ১১টার পরও খেলে বেড়াচ্ছে পড়ুয়ারা দেরিতে আসায় শিক্ষকদের শোকজ
    বর্তমান | ০১ মার্চ ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: ঘড়ির কাঁটায় বেলা ১১টা বেজে গেলেও দেখা নেই শিক্ষকদের। ফলে স্কুলে এসেও দিব্যি মাঠে খেলে বেড়াচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। পড়াশোনার নামগন্ধ নেই। শুক্রবার এমনই ছবি দেখা গেল জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া দেবনগর নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে। সরকারি প্রাথমিকের এই হাল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকদের অনেকে। যদিও অভিযোগ পাওয়া মাত্র পদক্ষেপ নিয়েছে জেলা শিক্ষাদপ্তর। শোকজ করা হয়েছে ওই স্কুলের শিক্ষকদের। 


    জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্যামলচন্দ্র রায় বলেন, কেন এদিন শিক্ষকরা সময়ে স্কুলে হাজির হননি, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। শোকজের পরিপ্রেক্ষিতে সন্তোষজনক উত্তর না পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 


    জলপাইগুড়ি সদর পশ্চিম মণ্ডলের অন্তর্গত দেবনগর নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে গিয়ে শুক্রবার দেখা যায়, ১১টা বেজে গেলেও ছাত্রছাত্রীরা মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মিড ডে মিলের কর্মী আন্না রায় বলেন, তাঁর কাছে স্কুলের চাবি ছিল। তিনি ঘর খুলে দিয়েছেন। শিক্ষকরা কেউ এখনও আসেননি। দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রের মা বলেন, ১১টায় স্কুল শুরুর কথা। কিন্তু এদিন শিক্ষকরা দেরিতে আসেন। 


    সোয়া ১১টায় বাইক নিয়ে এক শিক্ষক আসেন। ইন্দ্রজিৎ বর্মন নামে ওই শিক্ষকের কাছে দেরিতে আসার কারণ জানতে চাইলে তাঁর উত্তর, রাস্তায় অবরোধে পড়েছিলাম। তাই দেরি হয়েছে। দেবনগর নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই হাইস্কুল। ওই স্কুলের শিক্ষকরা অবশ্য আগেই চলে এসেছেন। হাইস্কুলের ক্লাসও শুরু হয়ে গিয়েছে। তাহলে তাঁরা এলেন কীভাবে? যদিও ওই প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে চাননি প্রাইমারির ওই সহ শিক্ষক। 


    দেবনগর নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে তিনজন শিক্ষক। ১১টা ২০ মিনিট নাগাদ একটি শ্রেণির পঠনপাঠন শুরু করেন ইন্দ্রজিৎবাবু। তখনও দু’জন শিক্ষক আসেননি। ঘড়ির কাঁটা যখন সাড়ে ১১টায়, তখন স্কুলে আসেন প্রধান শিক্ষক। ততক্ষণে শিক্ষকদের দেরিতে আসার খবর পৌঁছে গিয়েছে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে। সেখান থেকে খবরও পেয়ে যান প্রধান শিক্ষক। স্কুলে এসেই তিনি কিছুটা চড়া গলায় প্রশ্ন করেন, কারা ডিআই অফিসে জানিয়েছেন? পরে অবশ্য সুর নরম করে সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ অফিসে বিশেষ কাজ ছিল। ওই কাজ মেটাতে গিয়ে স্কুলে আসতে দেরি হয়ে গেল। খানিক পরেই সহ শিক্ষক ইন্দ্রজিৎ বর্মনের সুরে প্রধান শিক্ষকের দাবি, রাস্তায় অবরোধে পড়েছিলাম। সেকারণে দেরি হয়েছে। তিনজনের মধ্যে দু’জন শিক্ষক এলেও একজন শেষপর্যন্ত এদিন স্কুলেই আসেননি। অ্যাটেনডেন্স খাতায় তাঁর নামের পাশে লালকালি দিয়ে অনুপস্থিত লিখে দেন প্রধান শিক্ষক। • বন্ধ ক্লাসঘর। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)