• মালদহে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের নামে জমা পড়ছে ‘সন্দেহজনক’ বিল
    বর্তমান | ০১ মার্চ ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: মালদহে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের নামে জমা পড়ছে সন্দেহজনক বিল। গোটা ঘটনায় চক্ষু চড়কগাছ স্বাস্থ্যকর্তাদের। এক মাসে চারটি এমন বিল স্বাস্থ্যদপ্তরের নজরে এসেছে। এজন্য দু’টি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে শোকজ করা হয়েছে। 


    মালদহ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) মডেল এসেছে স্বাস্থ্যসাথীর সঙ্গেই। আধার সংযুক্তি বাধ্যতামূলক। ধরা যাক, একজন রোগীর ডায়ালিসিস শুরু হওয়ার দু’ঘণ্টা পর নথিভুক্ত করা হল। এরপর দেখা যাচ্ছে ডায়ালিসিস শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সময় নথিভুক্ত হয়ে গেল। ফলে দেখা যাচ্ছে, চার ঘণ্টার ডায়ালিসিস তিন ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেল। সেটা উচিত নয়। মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে কোনওরকম খামতি রাখা যাবে না। রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু করেছে। উদ্দেশ্য স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে তাঁরা নার্সিংহোমে যাবেন এবং কার্ডের বিনিময়ে চিকিৎসা পরিষেবা নেবেন। যেখানে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের খরচ উল্লেখ করা আছে। কিন্তু বেশকিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ সঠিক চিকিৎসা না করেই সন্দেহজনক বিল দাখিল করছে। মালদহে সম্প্রতি বেশকিছু নার্সিংহোমের বিল পরীক্ষা করে এমন কিছু সন্দেহজনক তথ্য পেয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর। 


    মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক আরও বলেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের এমন সন্দেহজনক ভুয়ো বিল রুখতে নতুন বছরের গোড়া থেকেই একটি অ্যাপ চালু করা হয়। সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমের ঠিক কতজন কর্মী এবং যাঁরা যাঁরা স্বাস্থ্যসাথী অ্যাপটি ব্যবহার করবেন, তাঁদের নাম রেজিস্ট্রেশন করতে বলা হয়েছে। এরপর সেই নামের তালিকা জমা দিতে বলা হয়েছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্যদপ্তরের স্বাস্থ্যসাথী সেলে। 


    স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে, কোনও রোগী অস্ত্রোপচার বা ডায়ালাসিসের জন্য নার্সিংহোমে ভর্তি হলে রোগীর ছবি সহ ভর্তির সময় ওই অ্যাপে উল্লেখ করতে হবে। অ্যাপে এমন তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যে সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমের ৫০ মিটার দূরে গেলেই সেটা আর ব্যবহার করা যাবে না। কাজেই কেউ চাইলেই বাড়িতে বা অন্যত্র বসে ওই অ্যাপটি চালাতে পারবেন না। অস্ত্রোপচার এবং ডায়ালাসিস শেষেও একই ভাবে সময়ের উল্লেখ করে অ্যাপে রোগীর ছবি ও ডিসচার্জের সময় আপলোড করতে হবে। স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি, এর ফলে অসাধু চক্র ভুয়ো বিল করতে পারবে না। 


    প্রশাসন ও স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারি থেকে এই অ্যাপটি চালু করা হয়েছে। আর ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই মালদহের দু’টি নার্সিংহোমের ডায়ালিসিসের চারটি সন্দেহজনক বিল ধরে ফেলেছে প্রশাসন। কীভাবে ধরা পড়ল এই ভুয়ো বিল? স্বাস্থ্যদপ্তরের এক কর্তা বলেন, একজন রোগীর ডায়ালিসিস করতে ন্যূনতম চার ঘণ্টা সময় লাগে। অথচ ওই দু’টি নার্সিংহোম ডায়ালিসিসের যে চারটি বিল জমা করেছে তার প্রত্যেকটি বিলেই চার ঘণ্টার কম সময়ের উল্লেখ আছে। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ভুয়ো বিল পেশ করার জন্য ওই দু’টি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে শোকজ করা হয়েছে। দুটি নার্সিংহোমের মধ্যে একটি ইংলিশবাজারে, আরেকটি কালিয়াচকে অবস্থিত। 
  • Link to this news (বর্তমান)