• সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি, বিয়ের ৩ দিন আগে আত্মহত্যার চেষ্টা কনস্টেবলের
    বর্তমান | ০১ মার্চ ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া ও বাঁকুড়া: বিয়ের তিন দিন আগে নিজের সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন এক পুলিস কনস্টেবল। শুক্রবার ভোররাতে চুঁচুড়া হাসপাতালের এই ঘটনায় তুমুল চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। চন্দননগর কমিশনারেটের ওই পুলিসকর্মীর নাম হিমাংশু মাঝি। বছর ২৬-এর ওই কনস্টেবল বৃহস্পতিবার রাতে চুঁচুড়া হাসপাতালের পুলিস সেলে ডিউটিতে ছিলেন। আগামী ৩ মার্চ তাঁর বিয়ের তারিখ ঠিক ছিল। হাসপাতালের ডিউটি সেরে এদিনই তাঁর ছুটিতে যাওয়ার কথা। তার আগে আত্মহত্যার চেষ্টা গোটা ঘটনায় অন্য মাত্রা যোগ করছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গুলি চালানোর আগে হিমাংশু দীর্ঘক্ষণ তাঁর হবু স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। এভাবে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পিছনে সেই কথোপকথনের কি কোনও প্রভাব আছে? উঠছে সেই প্রশ্নও। 


    আশঙ্কাজনক অবস্থায় হিমাংশুকে প্রথমে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে ‘গ্রিন করিডর’ করে তাঁকে পাঠানো হয় কলকাতার একটি হাসপাতালে। চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কনস্টেবল তাঁর ডান কানের পাশে সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালিয়েছেন। গুলি বাম কানের পাশ দিয়ে ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে সেই গুলি। রাতে তাঁর সঙ্গে আরও এক কনস্টেবল ডিউটিতে ছিলেন। ঘটনার তীব্র অভিঘাতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। 


    এদিন সকালেই চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিস কমিশনার অমিত পি জাভালগি ঘটনাস্থলে যান। পুলিস জানায়, তদন্ত শুরু হয়েছে। হিমাংশুর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। বাড়ির লোকজন কলকাতায় পৌঁছেও গিয়েছেন। ইমামবাড়া হাসপাতালের প্রবীণ শল্য চিকিৎসক প্রকাশ সামন্ত বলেন, ‘স্ক্যান রিপোর্টে মস্তিষ্কে একটি স্পট দেখা গিয়েছে। সেটি আসলে কী, তা বোঝা যাচ্ছে না। উনি অজ্ঞান অবস্থায় থাকলেও রক্তচাপ সহ একাধিক জরুরি শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াগুলি স্বাভাবিক আছে। সেটাই আশার কথা।’ 


    জানা গিয়েছে, এমনিতে হিমাংশু বেশ হাসিখুশি এবং তরতাজা একজন কনস্টেবল। বাড়ি বাঁকুড়ার হিড়বাঁধ এলাকায়। মা-বাবা, দাদু এবং এক দাদা আছেন তাঁর। দাদা সিআইএসএফে চাকরি করেন। বছর দু’য়েক আগে হিমাংশু চন্দননগর কমিশনারেটে যোগ দেন। চুঁচুড়ায় তাঁকে আনা হয় দেড় মাস আগে। সহকর্মীদের কাছে তিনি বাপ্পা নামেই বেশি পরিচিত। বৃহস্পতিবার ডিউটিতে এসে অনেক রাত পর্যন্ত তিনি ফোনে কথা বলেন। ভোররাতে তাঁর সঙ্গী পুলিসকর্মী শৌচাগারে যান। তখনই গুলির শব্দ তাঁর কানে আসে। নার্সদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ছুটে আসেন তিনি। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করানো হয়।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)