এবার গরমের তীব্রতা বেশি হবে, উষ্ণতায় রেকর্ড করল ফেব্রুয়ারি
বর্তমান | ০১ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এবার গরমের মরশুমে দেশে উষ্ণতার তীব্রতা বেশি হবে বলে জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর। মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত গরমকালে আবহাওয়ার সম্ভাব্য মতিগতি নিয়ে বিশেষ পূর্বাভাস শুক্রবারই জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। তাতে জানানো হয়েছে, এই সময়ে দেশের বেশিরভাগ জায়গায় (এর মধ্যে পূর্ব ভারতও আছে) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি থাকবে। তাপপ্রবাহের সংখ্যাও স্বাভাবিকের থেকে বেশি হবে। আবহাওয়া দপ্তরের রিপোর্ট থেকে আরও জানা যাচ্ছে, ফেব্রুয়ারি মাসে গোটা দেশ বেশি উষ্ণ ছিল। ১৯০১ সাল থেকে দেশের আবহাওয়া সংক্রান্ত পরিসংখ্যানের তথ্য কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের রেকর্ডে রয়েছে। সারা দেশের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নিরিখে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় উষ্ণতম বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে। কিন্তু সর্বনিম্ন ও গড় তাপমাত্রার নিরিখে ২০২৫-এর ফেব্রুয়ারি এই সময়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। শীতের মাত্রা নির্ধারিত হয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রার নিরিখে। এই হিসেবে এবারের ফেব্রুয়ারির শীত ‘উষ্ণতার’ বিচারে রেকর্ড করেছে। অর্থাৎ শীতের ফেব্রুয়ারি দেশে সবথেকে উষ্ণ ছিল।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে দেশের গড় স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭.৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবার ফেব্রুয়ারিতে দেশের গড় সর্রোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২৯.০৭ ডিগ্রি। এটা স্বাভাবিকের থেকে ১.৪৯ ডিগ্রি বেশি। এর থেকে বেশি সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (২৯.৪৪ ডিগ্রি) শুধু হয়েছিল ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। গড় ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার নিরিখে ২০২৫ এর ফেব্রুয়ারি ১৯০১ সাল থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। ফেব্রুয়ারিতে দেশে স্বাভাবিক গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.৮২ ডিগ্রি। সেখানে এবার হয়েছে ১৫.০২ ডিগ্রি, যা স্বাভবিকের থেকে ১.২ ডিগ্রি বেশি। গড় তাপমাত্রার নিরিখে ফেব্রুয়ারি রেকর্ড করেছে। ফেব্রুয়ারিতে গড় স্বাভাবিক তাপমাত্রা ২০.৭০ ডিগ্রি। এবারে তা ছিল ২২.০৪ ডিগ্রি, যা স্বাভাবিকের থেকে ১.৩৪ ডিগ্রি বেশি।
ইতিমধ্যে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা ২০২৪ সালটিকে বিশ্বের উষ্ণতম বলে চিহ্নিত করেছে। ২০১৬ সালের রেকর্ডকে ছাপিয়ে গিয়েছে ২০২৪। ২০২৫ সালও উষ্ণতা বেশি থাকবে বলে তারা ইঙ্গিত দিয়েছে। এল নিনো পরিস্থিতিতে গরম বেশি পড়ে। ২০২৪ সালের বেশিরভাগ সময় এল নিনো ছিল না। নিউট্রাল এসনো পরিস্থিতি ছিল। লা নিনা পরিস্থিতিতে গরমের মাত্রা কমে। দুর্বল লা নিনা পরিস্থিতি সবে শুরু হলেও তা বেশি স্থায়ী হবে না বলে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছেন। খুব তাড়াতাড়ি নিউট্রাল পরিস্থিতি ফের এসে যাবে। প্রশান্ত মহাসাগরে জলের উষ্ণতার নিরিখে তৈরি হওয়া এই পরিস্থিতি ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আবহাওয়াকে প্রভাবিত করে। এল নিনো পরিস্থিতিতে গরম বাড়ে ও বৃষ্টিপাত কমে। লা নিনা পরিস্থিতিতে বিপরীত হয়। তবে আবহাওয়াবিদ ও পরিবেশবিদরা পৃথিবীজুড়ে গরম বৃদ্ধির জন্য ‘বিশ্ব উষ্ণায়নকেও’ দায়ী করছেন।