হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য: ফের কড়া ভর্ৎসনা রাজ্যকে
বর্তমান | ০১ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নির্দেশ কার্যকর না করায় ফের হাইকোর্টের কড়া ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য। এবার রীতিমতো সিআইএসএফ নামিয়ে নির্দেশ কার্যকর করার হুঁশিয়ারি দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
ঘটনা হল, একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের রানিগঞ্জ শাখা থেকে লোন নিয়ে একটি জেসিবি মেশিন কিনেছিলেন বীরভূমের রামপুরহাটের বাসিন্দা তুফান শেখ। ২০১১ সালে মোট ১২ লাখ ১১ হাজার ৯৯৫ টাকা লোন নেন তিনি। এরপর ৩৫টি কিস্তিতে সেই টাকা ব্যাঙ্ককে মিটিয়ে দেওয়ার কথা ছিল ওই ব্যক্তির। কিন্তু কয়েকটি কিস্তি মেটানোর পর তিনি আর কিস্তি মেটাননি। শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালে ওই জেসিবি সিজ করে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত ব্যাঙ্কের ওই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন তুফান। নিম্ন আদালত ৫০ লক্ষ টাকার জিম্মা বন্ডে ওই জেসিবি তুফানকে হস্তান্তর করে। এবার নিম্ন আদালতের ওই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। সেই মামলায় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশ ছিল, প্রতি সপ্তাহে তুফানকে থানায় হাজিরা দিয়ে দেখাতে হবে ওই জেসিবি মেশিন তাঁর কাছে রয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ চাইলে তা যাচাই করতে পারবে। কিন্তু এই নির্দেশ অমান্য করে দিনের পর দিন থানায় হাজিরা দিচ্ছিলেন না তুফান।
তার জেরে ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। সেই মামলায় তুফানকে এজলাসে হাজির করাতে রামপুরহাট থানাকে নির্দেশ দেন বিচারপতি। শুক্রবার মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে আইনজীবী জানান, ওই ব্যক্তিকে ফোন করা হয়েছিল কিন্তু তিনি থানায় উপস্থিত হননি। রাজ্যের এই বক্তব্য শুনেই বেজায় ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি ঘোষ। বিচারপতি বলেন, ‘অবিলম্বে ওই জেসিবি বাজেয়াপ্ত করুন? অভিযুক্তকে শুধু ফোন করেই বসে থাকলেন! ওই ব্যক্তি কত প্রভাবশালী যে রাজ্য তাঁকে আড়াল করার চেষ্টা করছে?’ ভর্ৎসনা করে বিচারপতি আরও বলেন, ‘যারা আদালতের নির্দেশের তোয়াক্কা করে না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি বুঝতে পারছি না, রাজ্য কেন এত তরফদারি করছে!’ বিচারপতি বলেন, ‘ভুলে যাবেন না, এই তদন্তকারী অফিসারেরও কিন্তু নিউ টাউন থানার আইসির মতো অবস্থা হবে। আমি এবার সিআইএসএফ ডাকব।’ নির্দেশ কার্যকর করতে রাজ্যকে ১০ মার্চ পর্যন্ত সময় দিয়েছেন বিচারপতি।