গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও দুই সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নবান্নে
বর্তমান | ০১ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: খাতায়-কলমে দেখানো হয়েছে রাস্তা থেকে নর্দমা— সবই সংস্কার করা হয়েছে। স্বভাবতই ঠিকাদার টাকাও পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু আদতে সেই কাজই হয়নি! বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হতেই জেলাশাসক থেকে শুরু করে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর ও মুখ্যসচিবকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন এলাকার মানুষ। ওই চিঠিতে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। তড়িঘড়ি তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বারাসত ২ নম্বর ব্লকের দাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দাদপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত উত্তর বয়রা গ্রামে সরকারিভাবে রাস্তা, নিকাশি নালা নির্মাণ সহ বেশ কিছু কাজের ওয়ার্ক অর্ডার বের হয়। সেই কাজের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়। তারপর নিয়মমাফিক বেশ কয়েকজন ঠিকাদারকে এই কাজের বরাত দেওয়া হয়। সরকারি নিয়মে আছে, রাস্তা ও নিকাশি নালার ছবি এবং তার পরিমাপ আপলোড করতে হবে। এখানেই কারসাজি করে অন্য ঢালাই রাস্তা ও পুরনো নর্দমার ছবি আপলোড করা হয়েছে। কাগজে-কলমে দেখানো হয়েছে, কাজ হয়ে গিয়েছে। এভাবেই আত্মসাৎ করা হয়েছে সরকারি টাকা।
সূত্রের খবর, এই বিতর্কে নাম জড়িয়েছে দাদপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মনিরুল ইসলাম, ব্লক ও পঞ্চায়েতের দুই সরকারি কর্মীর। তাঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। ২৯ জানুয়ারি অডিটে এই বেনিয়ম ধরা পড়ে। এরপর বিষয়টি ‘ধামাচাপা’ দেওয়ার চেষ্টা করে পঞ্চায়েত। এদিকে, বাসিন্দারা প্রশাসনের একেবারে শীর্ষস্তরে অভিযোগ জানানোয় এখন লেজেগোবরে অবস্থা পঞ্চায়েতের। গ্রামবাসীরা বলছেন, সরকার এলাকার উন্নয়নের জন্য টাকা বরাদ্দ করেছে। সেই টাকা কাজ না করে লোপাট করা হয়েছে। এ নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান মনিরুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে লাইন কেটে দেন।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিডিও সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা গ্রহণ হবে। এ নিয়ে বিজেপি নেতা তাপস মিত্রের কটাক্ষ, যাঁদের নামে অভিযোগ উঠেছে, ক্ষমতা থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক সরকার।