• দখলদারি নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব  মিনাখাঁয় তুলকালাম, দোকান ভাঙচুর
    বর্তমান | ০১ মার্চ ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: ‘নেতা নয়, দল বড়’— ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কর্মীদের এই বার্তাই দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই নিদানের পর কয়েক ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ‘এলাকা দখল’ নিয়ে উত্তপ্ত হল মিনাখাঁ। চলল কর্মীদের মধ্যে মারামারি, দেদারে দোকান ভাঙচুর। এ ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সহ অন্তত ১০ জন কর্মী। অভিযোগ, হামলার নেপথ্যে রয়েছে তৃণমূল নেতা আব্দুল খালেক মোল্লা ও মিনাখাঁর বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডলের স্বামী মৃত্যুঞ্জয়ের এলাকা দখলের রাজনীতি।


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাড়োয়া ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বদলকে ঘিরে বেশ কয়েকদিন ধরেই তপ্ত ছিল মিনাখাঁ। ফরিদ জমাদারকে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে ওই পদে আনা হয়েছে সিরাজুল ইসলামকে। ফরিদ তৃণমূলের যুব সভাপতি আব্দুল খালেক মোল্লার গোষ্ঠীর বলে পরিচিত। নতুন ব্লক সভাপতি সিরাজুল আবার মৃত্যুঞ্জয়ের ঘনিষ্ঠ। 


    ব্লক সভাপতি বদলের পর থেকেই দুই বিবদমান গোষ্ঠীর কাজিয়া চরমে উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে মিনাখাঁর কুলটি-লকগেট বাজারে চায়ের দোকানে বসেছিলেন খালেকের গোষ্ঠীর লোকজন। অভিযোগ, সেই সময় অতর্কিতে হামলা চালায় দলের পাল্টা গোষ্ঠীর লোকজন। এই ঘটনায় কয়েকজনের মাথা ফেটেছে। হাতে-পায়ে চোটও পেয়েছেন কয়েকজন। তাঁদের রাতেই নিয়ে যাওয়া হয় মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে। আহতদের মধ্যে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুর রউফ মোল্লা ও তাঁর ছেলে মিলন মোল্লার আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে। এদিকে, ওই রাতেই হামলাকারীরা বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ। 


    আক্রান্ত পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুর রউফ মোল্লা বলেন, ‘বিধায়কের স্বামী নিজে দাঁড়িয়ে থেকে হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমরা খালেক মোল্লার সঙ্গে রয়েছি। সেই কারণে পরিকল্পিত হামলা।’ ঘটনার পিছনে রাজনীতির যোগ নেই বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতা মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল। তিনি বলেন, এটা ব‍্যক্তিগত বিবাদ থেকে হয়েছে। হামলা হয়েছে বলে শুনেছি। আমার কোনও গোষ্ঠী নেই। পুলিস তদন্ত করছে, তারাই ব্যবস্থা নেবে। শুক্রবার মিনাখাঁর কুলটিতে গিয়ে দেখা গেল, গোটা এলাকা থমথমে। বাসিন্দাদের চোখেমুখে উৎকণ্ঠা, আতঙ্ক। পুলিস সূত্রে বলা হয়েছে, এই ঘটনায় দু’পক্ষের মোট ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)