ট্যাংরা কাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের কলকাতায় মর্মান্তিক মৃত্যু। বেহালার শকুন্তলা পার্ক থেকে উদ্ধার হলো বাবা ও মেয়ের ঝুলন্ত দেহ। কী কারণে এই অস্বাভাবিক মৃত্যু তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধন্দ। মৃত ব্যক্তির নাম স্বজন দাস। তাঁর স্ত্রীয়ের দাবি, মেয়েকে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার কথা বলে দু’জনে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। সন্ধে গড়িয়ে যাওয়ার পরও বাবা ও মেয়ে বাড়ি না ফেরায় খোঁজখবর শুরু করেন স্ত্রী। তখনই বেহালায় স্বজন দাসের অফিস ঘর থেকে উদ্ধার হয় তাঁর ও তাঁর মেয়ে সৃজা দাসের দেহ।
স্বজন দাস পেশায় ব্যবসায়ী। বাড়ি মহেশতলার নুঙ্গিতে। শকুন্তলা পার্কে চিমনি-ওয়াটার পিউরিফায়ারের দোকান ছিল তাঁর। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় দু’জনের মৃতদেহ। জানা গিয়েছে, ২২ বছর বয়সি সৃজা অটিজ়মে আক্রান্ত ছিলেন। ছোট থেকেই তাঁর চিকিৎসা চলত। দীর্ঘ দিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন স্বজনবাবু। মেয়ের চিকিৎসা নিয়ে চিন্তিত থাকতেন তিনি। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়, এমনকী রাজ্যের বাইরেও সৃজাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতেন তিনি।
মানসিক অবসাদের কারণেই এমন পদক্ষেপ, নাকি এর মধ্যে অন্য কোনও কারণ আছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছছে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ ও লালবাজারের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম। পুলিশ সূত্রে খবর, একই দড়ির দুই প্রান্তে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার হয় স্বজনবাবু ও সৃজার দেহ।
এই ঘটনায় হতবাক স্থানীয়রাও। তারা জানিয়েছেন, নির্বিবাদী, মিশুকে মানুষ ছিলেন স্বজন দাস। তবে মেয়েকে নিয়ে চিন্তিত থাকতেন। স্বজনবাবুর স্ত্রী জানিয়েছেন, শুক্রবার দুপুর একটার সময় মেয়েকে ডাক্তার দেখাতে বাড়ি থেকে বেরোনোর পর সন্ধেতেও ফিরে না আসায় চিন্তা শুরু হয়। তখন তিনি স্বজনবাবুর পরিচিতদের ফোন করতে শুরু করেন। তাদের মধ্যেই একজন বেহালার অফিসে খোঁজ নিতে গিয়ে সৃজা ও স্বজন বাবুর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পান।
পুলিশ সূত্রে খবর, শকুন্তলা পার্কের ওই অফিস ঘর আসলে একটা ফ্ল্যাট। তাতে দুটো বেডরুম রয়েছে। ঘটনার দিন কর্মচারীদের সকালে ফোন করে অফিসে আসতে বারণ করেছিলেন স্বজনবাবু বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করতে বাড়িতে ঢুকলে দেখতে পায় সেখানে এসিও অন করা ছিল। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ।