• ‘ভূতুড়ে ভোটার’ খুঁজতে মমতার কেন্দ্রে ফিরহাদ, ভবানীপুরে শুরু বাড়ি-বাড়ি অভিযান
    এই সময় | ০১ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়: ২০২৬ বিধানসভা ভোটের খেলায় দলীয় কর্মীদের ‘আরও জোরে বল মারা’র নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মেজাজ টের পেয়ে দ্রুত ‘ওয়ার্ম আপ’ শুরু করে দিতে চলেছে জোড়াফুল শিবির। আজ, শনিবার থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ‘ভূতুড়ে ভোটার’ খুঁজে বার করার কাজ শুরু করে দেবেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাঁর কথায়, ‘দলনেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। দ্রুত কাজ শুরু করে দিতে হবে।’

    বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরের বিশেষ সম্মেলন থেকে মমতা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, ভোটার তালিকায় থাকা ‘ভূতুড়ে ভোটারদের’ চিহ্নিত করার কাজটা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় করতে হবে। ভোটার তালিকা থেকে ভুয়ো ভোটারদের খুঁজে বার করার যে ‘অ্যাসাইনমেন্ট’ মমতা দলের নেতা–কর্মীদের দিয়েছেন, সেটা যে মোটেই হালকা চালে নেওয়ার জো নেই, বৃহস্পতিবার রাতেই সেটাই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

    কারণ, নেতাজি ইন্ডোরের সভা সেরে নিজের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরের আটজন তৃণমূূল কাউন্সিলারকে নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন ফিরহাদও। সূত্রের খবর, ভবানীপুরে তৃণমূলকে সাংগঠনিক ভাবে আরও শক্তিশালী করার বার্তা দিয়েছেন মমতা। একইসঙ্গে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, ভবানীপুরে ‘ভূতুড়ে ভোটার’ থাকলে সেটাও খুঁজে বার করতে হবে দ্রুত।

    এরপর আর কাজটা ফেলে রাখতে চাইছেন না জেলাস্তরের তৃণমূল নেতারা। বিভিন্ন জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব ‘ভূতুড়ে ভোটার’ খুঁজতে বৈঠক ডাকার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন। উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল নেতৃত্ব শুক্রবারই এ বিষয়ে বৈঠক সেরে ফেলেন। এ দি‍‍‍ন দুপুরে মধ্যমগ্রামের জেলা পার্টি অফিসে বৈঠক করেন তাঁরা। হাজির ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, হাবড়ার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা বিবি–সহ আরও অনেকে।

    শনিবার বীরভূমে বৈঠকে বসতে চলেছেন অনুব্রত মণ্ডলরা। মমতার নির্দেশ মতো ওই বৈঠকে ডাকা হয়েছে কাজল শেখকেও। ‘ভূতুড়ে ভোটার’ চিহ্নিতকরণের রণকৌশল ঠিক করতে শনিবার মালদাতেও তৃণমূলের বৈঠক বসতে চলেছে। সেখানে জেলার সব বিধায়ক, সাংসদরা ছাড়াও জেলা কমিটির পদাধিকারীরাও হাজির থাকবেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী মঙ্গল–বুধবারের মধ্যে এই ইস্যুতে সব জেলায় বৈঠক সেরে ফেলবে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার তৃণমূলনেত্রী রাজ্যস্তরের যে ৩৬ জনের কমিটি গড়ে দিয়েছেন, কিছুদিনের মধ্যে সেই কমিটিও বৈঠকে বসতে চলেছে।

    এ দিকে, বিজেপিও প্রতিটি জেলায় নির্দেশ পাঠিয়েছে, ‘ভূতুড়ে ভোটার’ ইস্যুতে তৃণমূল যাতে কোনও রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে না–পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তবে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের বিড়ম্বনা আরও বেড়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে তিনি বলেছিলেন, ‘বাজারে রটানো হচ্ছে, আমি নাকি বিজেপিতে যাচ্ছি! কিছু সংবাদমাধ্যম এই কাজটা করছে।’

    বিজেপিতে যাওয়ার অপপ্রচারে অভিষেক নিজেই জল ঢালল‍েও বিজেপি পড়েছে চরম অস্বস্তিতে। দলের নিচুতলার নেতাদের একাংশ প্রশ্ন তুলছে, ‘বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব কি অভিষেককে দলে নিতে চাইছিলেন?’ এ দিন নিচুতলার কর্মীদের মন থেকে সেই বিভ্রান্তি দূর করতে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে দফায় দফায় সংবাদমাধ্যমে বলতে হয়, ‘বিজেপির কেউ ওঁকে দলে আসতে বলেননি।’

  • Link to this news (এই সময়)