• 'এত কম সময়ে পৌঁছে গেলে?' উত্তরে খটকা লাগেনি, তারপর থেকেই বর ও অটিস্টিক মেয়ের...
    ২৪ ঘন্টা | ০১ মার্চ ২০২৫
  • অয়ন ঘোষাল: বেহালার শকুন্তলা পার্কে জোড়া দেহ উদ্ধার। বাবা ও মেয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। মৃত স্বজন দাসের মেয়ে সৃজা দাস। ব্যবসায়ী স্বজন দাসের অফিসেই দু’জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। শুক্রবার দুপুরে মেয়েকে ডাক্তার দেখানোর নামে বেরোন স্বজন দাস। অটিজম রোগে আক্রান্ত ছিল ২২ বছরের সৃজা। পরিবার সূত্রে খবর, চিকিত্‍সা করেও সুফল মেলেনি। এই নিয়ে অবসাদে ভুগছিলেন বাবা স্বজন দাস। 

    ঘটনার আগে কেমন আচরণ? শুক্রবার নিজের অফিসে ঢোকার সময়েও স্বাভাবিক আচরণ। স্বাভাবিক আচরণ ছিল স্বজন দাসের। উল্টো দিকের বাসিন্দাদের সঙ্গে স্বাভাবিক কথা। বাড়ি থেকে এসএসকেএমে যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন সঙ্গে মেয়েকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন স্বজন দাস। স্ত্রীকে বলেছিলেন, চিকিত্‍সককে দেখাতে নিয়ে যাচ্ছি। বিখ্যাত চিকিৎসক সব্যসাচী মিত্রকে দেখাতে নিয়ে যাচ্ছি। বলেছিলেন, এস এস কে এম হাসপাতালে আজ মেয়ের জন্য মেডিক্যাল বোর্ড বসবে। সব্যসাচী মিত্র বোর্ড গঠনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন বলে জানান। 

    সাড়ে ১২টায় মহেশতলার বাড়ি থেকে বেরিয়ে ১টা ১০ মিনিটে অফিসে। স্ত্রীকে জানান, আমি এসএসকেএমে পৌঁছে গিয়েছি।  স্ত্রী শুনে অবাক হয়ে যান। এতো কম সময়ে পৌঁছলেন কিভাবে? প্রশ্ন করেন স্ত্রী। স্বামী তাঁকে বলেন,রাস্তা একদম ফাঁকা,তাই পৌঁছে গেলাম। সোয়া ১ টা নাগাদ অফিসের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপর থেকে আর কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। মেয়ে সৃজা খুব মিশুকে ছিলেন। মেয়ে অন্তপ্রাণ ছিলেন বাবা, খুব মিশুকে ছিলেন। যেখানে অফিস সেখানকার কিছু মানুষের সঙ্গে প্রায় আত্মীয়তার মতো সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছিল। 

    অফিস ঘর আসলে একটা ফ্ল্যাট। দুটো বেডরুম। একটা ডাইনিং। কিচেন। দুটো বাথরুম। পিছনের বেডরুমে ঝুলন্ত দেহ দুটি উদ্ধার করেছে পুলিস। ঘটনার দিন সকালে, স্বজন দাস কর্মচারীদের সকালে ফোন করে জানিয়েছিলেন, 'আজ অফিস বন্ধ। তোমরা কেউ এসো না। আমি মেয়েকে নিয়ে আজ ডাক্তারের কাছে যাব।' এরপরই এই ঘটনার কথা জানা যায়। স্বজন দাসের বাড়ি মহেশতলা থানার নুঙ্গি এলাকায়। শকুন্তলা পার্ক লাগোয়া হো চি মিন সরণির এই অফিসে গতকাল দুইজন ঢোকার পর আর কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। ভিতরে লাইট জ্বলছিল। এসি মেশিন অন ছিল। বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় তিনি জানিয়েছিলেন, মেয়েকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাচ্ছেন।

    এরপর সন্ধ্যে ৭ টা বেজে গেলেও তাকে ফোনে না পাওয়ায় উদ্বিগ্ন স্ত্রী কিছু বন্ধুবান্ধবকে ফোন করেন। তারা এই অফিসে আসেন। বাইরে থেকে বেল বাজিয়ে দরজা ধাক্কাধাক্কি করার পরেও না খোলায় তারা দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে জোড়া ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। তারা পর্নশ্রী থানায় খবর দিলে পুলিস আসে। এরপর আসে লালবাজারের গোয়েন্দা শাখা। রাত সাড়ে ১২ টা নাগাদ জোড়া মরদেহ বাড়ি থেকে বের করে পুলিস ময়নাতদন্তে পাঠায়।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)