দেড় মাস হয়ে গেল। সেই ১৮ জানুয়ারি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। এখনও ফেরেননি। ছেলে একটু ‘অন্য রকম’, সব সময় থম মেরে থাকে, কারও সঙ্গে কথাও বলে না— কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন অশোকনগরের মিনতি দে। পুলিশ থেকে মন্দির সব জায়গায় ছেলের খোঁজে যান মহিলা। তবু বছর আটত্রিশের ছেলের কোনও খোঁজ নেই। দুই মেয়ের বিয়ে দেওয়ার পর বিধবা মায়ের একমাত্র সম্বল এই ছেলে। সব সময়ই চোখে চোখে রাখতেন ছেলে পিন্টু দে-কে। সেই ছেলেকে হারিয়ে দিশাহারা অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাকপুল এলাকার বাসিন্দা মিনতি দে।
মিনতি দে জানান, ১৮ জানুয়ারি পিন্টু বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। এর আগেও এই ভাবে রকম বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। মা জানান, ছেলে ঘুরতে ভালবাসেন। এ দিক ও দিক প্রায়ই যেতেন। কিন্তু এত দিন বাড়ি ছেড়ে থাকেননি কোনও দিন। পিন্টু কোনও কাজ করেন না। মা মিনতি দে একটি গেঞ্জি কারখানায় ছেলের কাজের ব্যবস্থা করলেও, সে কাজ করতে রাজি হননি পিন্টু।
মিনতি দে বলেন, ‘আমার ছেলে কারও সঙ্গে তেমন কথা বলে না, নিজের মতো ঘুরে বেড়ায়। ছেলেটা কাজ করতে চায় না। একটু মানসিক সমস্যা রয়েছে। পিজিতে টানা ডাক্তার দেখিয়ে এখন অনেকটাই সুস্থ।’ কিন্তু এ ভাবে বাড়ি ছেড়ে কোথায় যাবে, বুঝতেই পারছেন না। অশোকনগর থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত ডায়েরিও করেছেন মিনতি দে।
পিন্টুর খোঁজ চলছে বলে পুলিশ দাবি করলেও, কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে অভিযোগ মিনতির। কথা বলতে বলতে তিনি কেঁদে ফেলছেন। বোঝাই যাচ্ছে, বুকের ভিতরে কী ঝড় চলছে। অনেক কিছুই হয়তো ভাবছেন, কিন্তু বলে উঠতে পারছেন না। একটা কথাই বলে চলেছেন, ‘আমার ছেলেটাকে কেউ আমার কাছে ফিরিয়ে দিন।’