এই সময়, শালবনি: চুয়াড় বিদ্রোহের নেত্রী রানি শিরোমণির আন্দোলনের ইতিহাস রাজ্যের স্কুলশিক্ষার পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার চিন্তাভাবনা করছে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর। এমনটাই জানালেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে বার্ষিক রাজ্য প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্রীড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে এমনটাই জানালেন। রানি শিরোমণির ইতিহাস পাঠ্যসূচিতে স্থান দেওয়ার দাবি দীর্ঘদিনের। এ দিন শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার পর অনেকের ধারণা, এতদিনে এখানকার মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতা আন্দোলনে রানি শিরোমণির অবদান কম নয়। এই জেলার বিধায়ক, রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া আমাকে বলছিলেন, ব্রিটিশের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলেনে রানি শিরোমণির অবস্থান ইতিহাস যদি স্কুল পাঠ্যসূচিতে স্থান দেওয়া যায়। আমি মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে আমাদের রাজ্যের যে সিলেবাস কমিটি রয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলব।’
প্রতিযোগিতা চলছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনির নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু স্টেডিয়ামে। এই শালবনির কর্ণগড়েই ছিল চুয়াড় বিদ্রোহের নেত্রী রাণী শিরোমণির গড়।প্রতিযোগিতার মাঠে তৈরি তিনটি মঞ্চের মধ্যে মূল মঞ্চের নামকরণ হয় রানি শিরোমণির নামে। মুল মঞ্চের পাশের দু’টি মঞ্চ, বিদ্যাসাগর ও ক্ষুদিরাম বসুর নামে। মূল মঞ্চের মুখোমুখি ছিল রানি শিরোমণির গড়ের একটি প্রতিমূর্তি। উদ্বোধনী নৃত্যের বিষয়ও ছিল রানি শিরোমণির ব্রিটিশেের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কিছু কাহিনী।
ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন রানি শিরোমণি। পরাধীন ভারতের প্রথম রাজনৈতিক মহিলা বন্দি শিরোমণি। শালবনির কর্ণগড় থেকেই দ্বিতীয় চুয়াড় বিদ্রোহের (১৭৯৮-‘৯৯) নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রানি শিরোমণি। ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দের ৬ এপ্রিল ইংরেজরা শিরোমণিকে চুয়াড় বিদ্রোহের প্রধান নেত্রী ঘোষণা করে বন্দি করে ব্রিটিশ পুলিশ।
কর্ণগড়ের প্রাসাদ লুঠ করে ধ্বংস করে দেয় ইংরেজ সৈন্যরা। শিরোমণিকে ওই গড়েই বন্দি করে রাখা হয়। অনেকেই তাঁকে পরাধীন ভারতের প্রথম রাজনৈতিক বন্দিনী বলে আখ্যা দেন। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁর ইতিহাস স্মরণীয় করে রাখার আবেদন উঠে আসে বিভিন্ন মহল থেকে। রানি শিরোমণি নিয়ে বিভিন্ন মহলে দাবি জানিয়ে যাওয়া নিসর্গনির্যাস মাহাত বলেন, ‘খুব আনন্দের খবর। রাজ্য সরকার যদি পাঠ্যসূচিতে রাণি শিরোমণিকে স্থান দেয় তা হলে খুবই ভালো।’