• দিল্লি থেকে ডিজিটাল অ্যারেস্টের অন্যতম চাঁই গ্রেপ্তার, নিয়ে আসা হবে কলকাতায়...
    আজকাল | ০১ মার্চ ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক :  কলকাতা পুলিশের বড় সফলতা। সাইবার প্রতারণার বড়সড় চক্র ফাঁস হল। অভিযোগ কলকাতার গলফগ্রিণ এলাকার বাসিন্দাকে ভয় দেখিয়ে প্রতারণার চক্র ফাঁস করা হয়। তাঁর কাছ তেকে ৪৭ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছিল। সাইবার প্রতারকরা অভিযোগকারীকে জানায় যে তার নথি ও ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে একটি পার্সেল পাঠানো হয়েছিল। এই পার্সেলে নিষিদ্ধ মাদক ছিল এবং এটি অর্থপাচারের সঙ্গেও যুক্ত ছিল। এরপরই অভিযোগকারী ভয় পেয়ে নিজের দায় ঝেড়ে ফেলতে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই টাকা দিয়ে দেন। 

    অভিযোগকারী ১২.০৬.২৪ তারিখে জনা স্মল ফিনান্স ব্যাঙ্কের একটি অ্যাকাউন্টে ৭,৪০,০০০ টাকা জমা করেছিলেন। এই টাকাকেই ট্র্যাক করে ২৮.০৯.২৪ তারিখে আনন্দপুর, পাটুলি এবং নরেন্দ্রপুর এলাকায় একাধিক অভিযান চালানো হয়।

    এই অভিযানে মোট ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং একটি অস্থায়ী অফিস ভেঙে ফেলা হয়। এখান থেকে  ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরির কাজ করা হয়েছিল। এই অফিস থেকে ১০৪টি পাসবুক, চেকবুক, ৬১টি মোবাইল ফোন, ৩৩টি ডেবিট কার্ড, ২টি কিউআর কোড মেশিন, ১৪০টি সিম কার্ড, ৪০টি ভুয়ো সিল, ১০টি ভাড়ার চুক্তিপত্র মিলেছে।

    তদন্তে আরও জানা গিয়েছে অফিসটি সিসিটিভির মাধ্যমে পরিচালিত হত এবং এখানে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংগ্রহ করে তাদের ইমেইল আইডি, পাসওয়ার্ড এবং অন্যান্য বিবরণ পরিবর্তন করা হত। পরে এই ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলি ভারতের বিভিন্ন প্রতারকদের কাছে বিক্রি করা হত। 

    এই চক্রের প্রধান অপারেটর হিসেবে চিরাগ কাপুরের নাম উঠে আসছে। তাকে ০৯.০১.২৫ তারিখে ব্যাঙ্গালোর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার এক সহযোগী ওঙ্কার সিং ছিল যে  এই ভুয়ো অ্যাকাউন্ট সংগ্রহ করে বিক্রি করত।  তাকে ২৬.১০.২৪ তারিখে দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দিল্লিতে গ্রেপ্তারের সময় এবং পরে কলকাতায় পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় অভিযুক্ত জানায়  সে দুই ভাই আদিত্য দুয়া ও যোগেশ দুয়ার নির্দেশে এই কাজ করত। এরপর তাদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালানো হলেও তারা পালিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

    কলকাতা পুলিশের একটি টিম ২৩.০২.২৫ তারিখ রাত ১০:২৫ নাগাদ দিল্লির বিবেক বিহার এলাকা থেকে অভিযুক্ত যোগেশ দুয়া তার বাবা ভরত ভূষণ দুয়া এবং বিবেক বিহারকে গ্রেপ্তার করে। ২৪.০২.২৫ তারিখে তাকে কড়কড়ডুমা আদালতে পেশ করা হয় ট্রানজিট রিমান্ডের জন্য। আদালত তাকে ট্রানজিট রিমান্ড না দিয়ে জামিন মঞ্জুর করে। তিনি জামিনের শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়।

    এরপর দিল্লি হাইকোর্টে আপিল করা হয় এবং আদালত নিম্ন আদালতের আদেশ বাতিল করে। শুক্রবার তাকে হেফাজতে নেওয়া হয় এবং কলকাতায় নিয়ে আসা হবে এখানে আদালতে পেশ করা হবে। তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ২টি মোবাইল ফোন, ২টি হার্ড ডিস্ক, ১টি ল্যাপটপ কম্পিউটার, ৮টি চেকবই, ৮টি এটিএম কার্ড, নগদ ১,৮৬,৮৯০ টাকা, ১০০০ জাপানি ইয়েন, ১০০ মার্কিন ডলার, ২টি প্যান কার্ড এবং বিভিন্ন ব্যক্তির নামে আধার কার্ড মিলেছে। এই মামলায় মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

     
  • Link to this news (আজকাল)