তৃণমূল নেতার রহস্যমৃত্যু ঘিরে শোরগোল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পলতায়। মৃতের নাম হান্নান গাজি। তাঁর পরিবারের অভিযোগ হান্নানকে খুন করে রাস্তায় ফেলে দিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। যদিও আরেকটি সূত্রের দাবি, শুক্রবার গভীর রাতে একটি চার চাকা গাড়ির ধাক্কায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁকে ধাক্কা মেরে খুন করা হল? না কি নিছক দুর্ঘটনা, তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এটি খুন নাকি দুর্ঘটনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হান্নান গাজি নোয়াপাড়া থানার অন্তর্গত বলতাছি পল্লির বাসিন্দা ছিলেন। এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত তিনি। বৃহস্পতিবার রাতে গ্যারেজ বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। রাত দেড়টা নাগাদ পলতা কালিয়ানিবাস রোড এলাকায় হঠাৎ একটি বিকট শব্দ শুনতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখেন, হান্নান রাস্তার উপরে পড়ে রয়েছেন। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এলাকাবাসী বাড়ির লোককে খবর দিলে তাঁরা এসে হান্নানকে উদ্ধার করে বিএন বসু মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকরা তৃণমূল নেতাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনাস্থলে যায় টিটাগড় থানার পুলিশ। মাথায় গভীর আঘাতের চিহ্ন দেখে পরিবার এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, হান্নানকে খুন করা হয়েছে। মৃতের ভাই বলেন, ও তো তৃণমূল করে। দেহ দেখে আমাদের মনে হচ্ছে না ওটা দুর্ঘটনা। শুধু দুর্ঘটনা হলে শরীরে ওরকম ক্ষত হওয়ার কথা নয়। ওকে খুন করা হয়েছে। মাথায় আর পায়ে ক্ষত রয়েছে। সম্ভবত ধারালো অস্ত্র বা রড জাতীয় কিছু দিয়ে মারা হয়েছে। শুক্রবার রাতে হান্নানের সঙ্গেই বাড়ি ফিরছিলেন তাঁর ভাগ্নে। তৃণমূল নেতার ভাগ্নের কথায়, মামার সঙ্গে রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটছিলাম। পিছন থেকে একটি গাড়ি হর্ন না দিয়ে ধাক্কা মেরে চলে যায়। মামাকে ইচ্ছাকৃতভাবে মারা হয়েছে।
এলাকায় অটো ইউনিয়নও সামলাতো হান্নান। ফলে যথেষ্ঠ প্রভাব প্রতিপত্তি রয়েছে তাঁর। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। কথাবার্তায় অসঙ্গতি থাকায় হান্নানের সঙ্গী অভিজিৎ নন্দীকে আটক করেছে পুলিশ। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সম্রাট তপাদার বলেন, হান্নান এলাকায় জনপ্রিয় এবং ওর প্রভাব ছিল। আমাদের মনে হচ্ছে, খুনই করা হয়েছে হান্নানকে। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ দাবি করছি আমরা।