রণজয় সিংহ: মালদা জেলার ভুতনি থানার অন্তর্গত হীরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নন্দিটোলার রবীন্দ্রনাথ মন্ডল, পেশায় ভিন রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক। পরিবারে রয়েছেন রবীন্দ্রনাথ বাবুর মা-বাবা, স্ত্রী ও দুই সন্তান। রবীন্দ্রনাথের ভাগ্যের পরিহাস দুই সন্তানের মধ্যে প্রথম সন্তান ছেলে, যার বয়স পাঁচ বছর। কিন্তু সেও বর্তমানে প্রতিবন্ধী অবস্থায়। অন্যদিকে, মৌমিতা প্রথম থেকে ভালো থাকলেও প্রায় ৮ মাস আগে জানতে পারে সেও এক বিরল রোগে আক্রান্ত। বর্তমানে মৌমিতার এক বছর দুই মাস।
ছোট্ট এই দুধের খুদে নিষ্পাপ শিশু নিজেও জানে না তার কি হয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত প্রায় ৮ মাস আগে। ছোট্ট এই মৌমিতা স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু হঠাৎ ৮ মাস আগে তার মা সুভদ্রা মন্ডল মৌমিতার মধ্যে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করে। সঙ্গে সঙ্গে তার স্বামীকে তিনি জানায়, সে সময় তার স্বামী ভিন রাজ্যে পরিচয় শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি বাড়ি ফিরে আসেন রবীন্দ্রনাথ।
গরিব পরিবার প্রথমে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দেখান। বিভিন্ন টেস্ট করার পর চিকিৎসকরা জানায়, তার কন্যা সন্তান স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি মাইক্রোডেলিশন (SMN1) মত এক বিরল রোগে আক্রান্ত। যার চিকিৎসার জন্য একটি ইনজেকশন দাম প্রায় ১৬ কোটি টাকা। এরপর তারা কলকাতায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় মৌমিতাকে। সেখানেও একইভাবে চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন তার দু'বছর পর্যন্ত আয়ু রয়েছে। তার মধ্যে এই দামি ইনজেকশনটি দিতে হবে।
তারপর থেকেই দিশাহারা পরিবার। ছোট্ট মৌমিতাকে কী করে বাঁচিয়ে রাখবে তা চিন্তার বাইরে তার বাবা-মায়ের। ডাক্তারদের কথা মত এত টাকার ইনজেকশন কোথায় থেকে আনবে তারা। যেখানে পরিবারের সদস্যদের দু-বেলার অন্ন জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয় রবীন্দ্রনাথকে সেখানে প্রায় ১৬ কোটি টাকা ইনটেকশন! তা ভেবে উঠতেই পারছে না।
তবে এই বিষয়ে মানিকচক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ অভিক শংকর কুমার জানান, কয়েক কোটি মধ্যে একটি বাচ্চার মধ্যে এই ধরনের রোগ দেখা যায়, একটি বিরল রোগ এই ছোট্ট মৌমিতার পাশে আমরা দাঁড়াবার চেষ্টা করব। আমার উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বিষয়টা জানাব, আশা করি স্বাস্থ্য দফতর থেকে যতটা সম্ভব এই পরিবারের পাশে দাঁড়াব।