‘বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে বুঝতে পারি…’, পিসিশাশুড়ি হত্যা কাণ্ডে ধৃত ফাল্গুনীর কীর্তিতে হতবাক স্বামী
প্রতিদিন | ০১ মার্চ ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ম্যাট্রিমনি ওয়েবসাইটে প্রথমবার দেখা। দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে। তবে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই অশান্তির সূত্রপাত। বর্তমানে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। পিসিশাশুড়িকে খুনের ঘটনায় মধ্যমগ্রামের ফাল্গুনীর কীর্তিতে হতবাক স্বামী। কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ফাল্গুনী ছোটবেলায় বাবাকে হারায়। বেশ কষ্ট করে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করে। টিউশন পড়ানোর উপার্জিত টাকায় বিধবা মাকে নিয়ে সংসার চালাত ফাল্গুনী। সেই সময় তারা থাকত দমদমের পূর্ব সিঁথি এলাকায়। ইতিমধ্যে ম্যাট্রিমনি সাইটে ফাল্গুনীর পরিবারের তরফে পাত্রের খোঁজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। সেই সময় পাত্রী খুঁজছিলেন অসমের জোরহাটের বাসিন্দা শুভঙ্করের পরিবারের লোকজনও। ফাল্গুনীকে দেখে পছন্দ হয়ে যায়। দুই পরিবারের সম্মতিতে শুভঙ্কর ও ফাল্গুনীর বিয়েও হয়।
ফাল্গুনীর স্বামীর দাবি, প্রথমদিকে সংসার ঠিকই চলছিল। তবে বিয়ের কয়েকমাস কাটতে না কাটতেই শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে মতবিরোধ শুরু হয়। একসময় কলকাতায় এসে আলাদা সংসার পাতার চেষ্টাও নাকি শুরু করে। সেই সময় অবশ্য অসমেই অন্য একটি বাড়িতে শুভঙ্কর ও ফাল্গুনী আলাদা থাকতে শুরু করেন। শুভঙ্করের দাবি, ওই বাড়িতে মাঝেমধ্যে বহু অচেনা পুরুষের আনাগোনা ছিল। তাদের বন্ধু বলে পরিচয় দিত ফাল্গুনী। স্বামীর সামনে তাদের সঙ্গে অশালীন কথাবার্তা বলত। কথায় কথায় ধূমপান করত। ফাল্গুনী মদ্যপান করেনি এরকম একটি রাতের কথাও মনে নেই শুভঙ্করের। সেই সময় থেকে স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে মনের কোণে সন্দেহ উঁকি দেয়। কিন্তু পরিবারের সম্মানের কথা ভেবে কাউকে কিছু জানাননি শুভঙ্কর। দুর্গাপুজোর সময় একবার মদ্যপান করে মণ্ডপে নাচানাচি করতে গিয়ে পড়ে যায় ফাল্গুনী। সেই প্রথমবার তার মদ্যপানের কথা জানাজানি হয়ে যায়।
শুভঙ্কর জানান, বছর তিনেক আগে তাঁর পরিবারের লোকজন কলকাতায় চিকিৎসা করাতে আসেন। সঙ্গে কলকাতায় আসে ফাল্গুনীও। দিনদশেক পর সকলে বাড়ি ফিরে গেলেও বেঁকে বসে ফাল্গুনী। ডিভোর্সের মামলা করে। খোরপোশও চায়। বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো হাতে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিস পেয়ে মন ভেঙে যায় শুভঙ্করের। এখনও মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। স্বামীর সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগও করেনি ফাল্গুনী। একমাত্র পিসিশাশুড়ির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। শুভঙ্করের দাবি, ফ্ল্যাট কেনার চেষ্টা করছিল ফাল্গুনী। ফ্ল্যাটের টাকার জন্য পিসিশাশুড়ির গয়না এবং নগদ টাকার হাতানোর চেষ্টা করছিল বলেই অভিযোগ শুভঙ্করের। তবে পিসিকে খুন করতে পারে ফাল্গুনী, তা ভাবতে পারেননি তার স্বামী। এই ঘটনায় রীতিমতো স্তম্ভিত তিনি।