• শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি ভাঙচুর, আক্রান্ত অধ্যাপকরা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০১ মার্চ ২০২৫
  • শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসলেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে তুমুল দাবি তোলা হবে বলে আগাম জানিয়েছিল সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই। এমনকী শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেরও দাবি তুলেছিল ছাত্ররা। আজ শিক্ষামন্ত্রী আসতেই ‘গেট আউট’ পোস্টার ফেলল অতিবামেরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন বসেছে ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভা। সেখানেই আসেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এখানে ভিড় করেছেন নানা কলেজের অধ্যাপকরা। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ভাষণ চলাকালীন সেখানে ঢুকে পড়ে বাম সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন সদস্য। তারপর চেয়ার ভাঙচুর, ধাক্কাধাক্কির জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন অধ্যাপকদের অনেকেই বলে অভিযোগ। ব্রাত্যের গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দেওয়া হয়। ‘চোর-চোর’ এবং ‘গো ব্যাক স্লোগান’ দেওয়া হয়।

    এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষামন্ত্রীও সরাসরি বাম ছাত্র সংগঠনকে লক্ষ্য করে কড়া মন্তব্য করেন। প্রতিবাদ করেন এমন ঘটনার। আর তাতে শনিবার সবমিলিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার সভা রণক্ষেত্রের চেহারা নিল। বাম সংগঠনের সদস্যদের স্লোগানে তপ্ত হয় ক্যাম্পাস। পাল্টা স্লোগান তোলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরাও। টানটান এই উত্তেজিত পরিবেশের মধ্যে ওয়েবকুপার সদস্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বাম সংগঠনের সদস্যরা। এরপর ভিতরে চলতে থাকে ব্রাত‍্য বসু জিন্দাবাদ স্লোগান। আর বাইরে মুর্দাবাদ স্লোগান। এসএফআই, আইসা, ডিএসএফ সদস্যরা শিক্ষামন্ত্রীর দু’টি পাইলট কারের কাচও ভেঙে দেন বলে অভিযোগ। তখন ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‌এই গুন্ডামি চলতে পারে না।’‌

    এদিকে এসএফআই–সহ অন্য বামপন্থী সংগঠনগুলি বারবার দাবি তুলতে থাকে, ছাত্র সংসদ নির্বাচন চাই। অবিলম্বে তার দিনক্ষণ ঘোষণা করতে হবে। এসব কানে গেলেও শিক্ষামন্ত্রী নিজের বক্তব্য থামাননি। বরং ব্রাত্য বসু মঞ্চ থেকেই প্রশ্ন করেন, ‘‌যারা এসব করছে, তারা কারা? তারা যে মতাদর্শের কথা বলে, সেই মতাদর্শ বিজেপিকে ঠেকাতে কী করেছে? শিক্ষায় গৈরিকীকরণ ঠেকাতেই বা তাদের ভূমিকা কী?’‌ তারপর দ্রুত নিজের বক্তব্য শেষ করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। আর অধ্যাপকদের নিয়ে ব্রাত্য বসু পৃথক বৈঠকে বসেন বলে সূত্রের খবর। অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্রকে লাঠি নিয়ে তাড়া করেন বাম এবং অতি বাম সংগঠনের পড়ুয়ারা।


    অন্যদিকে এই ঘটনায় যে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী অত্যন্ত ক্ষুব্ধ সেটা বুঝিয়ে দেন। বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের আচরণের তীব্র প্রতিবাদ করেন ব্রাত্য বসু। এক মহিলা অধ্যাপকের শাড়ি ছেঁড়ার অভিযোগও উঠেছে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। এক পড়ুয়ার মাথা ফেটেছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনা নিয়ে ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‌যে বামপন্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমরা চিহ্নিত করি সেটা একেবারেই সোভিয়েত রেজিমেন্টেড বামপন্থা নয়। ওটা আসলে ল‍্যাটিন আমেরিকান বামপন্থা। যার মাথায় একজন জনসম্মোহনকারী নেতা থাকে। মাঝে একটা ঢিলেঢালা পার্টি, নিচে জনগণ থাকে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগেও আন্দোলন হয়েছে। সেই আন্দোলনের নেতাদের এখন আর দেখতে পাবেন না। তাঁরা এখন সব ভিন রাজ্যে বা বিদেশে। তাঁদের রাজ্য নিয়ে কিছু যায় আসে না। এরা শুধুই অ‍্যাটেনশন সিকার। এরা ভুয়ো মতাদর্শ নিয়ে চলে।’‌
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)