বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সভা থেকে ‘ভূতুড়ে ভোটার’ নিয়ে কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছিলেন, ভোটার লিস্ট ‘ক্লিন’ করতে হবে। একজনও ‘ভূতুড়ে ভোটার’ রাখা যাবে না। আর এই কাজ করার জন্য দলের কর্মীদের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কাজে কোনও গাফিলতি হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। কারণ ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের খেলায় দলীয় কর্মীদের আরও জোরে বল মারার নিদান দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এবার ‘ওয়ার্ম আপ’ শুরু হয়ে গেল। আজ, শনিবার থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ‘ভূতুড়ে ভোটার’ খুঁজে বার করার কাজ শুরু করলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
এদিকে একই এপিক নম্বরে দু’জন ভোটার আছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। ‘ভূতুড়ে’ ভোটার চিহ্নিত করতে তাই প্রত্যেকের দুয়ারে যাচ্ছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। চেতলায় ভোটার তালিকা হাতে নিয়ে স্ক্রুটিনির কাজ করতে দেখা গেল তাঁকে। প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার কার্ড দেখেন মেয়র। কথা বলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে। তাঁরা এমন কিছু জানলে তা জানাতে বলেছেন। একইসঙ্গে ভবানীপুরের রাস্তায় নেমেছেন স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলরও। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই কলকাতা থেকে জেলা, শনিবার সকাল থেকে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখছেন। যদিও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী উক্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।
অন্যদিকে বিরোধী দলনেতা রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে গিয়ে চাপ দেন। যাতে তিনি ভিডিয়ো কনফারেন্স করে নয়াদিল্লিতে সমস্ত ঘটনা জানান। আর ভোটার কার্ড পরীক্ষা করে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘দলনেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। দ্রুত কাজ শুরু করে দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী যখন বলেছেন তখন সেই কাজ বাংলার মানুষকে গণতান্ত্রিক উপায়ে ভোট দিতে আমরা সাহায্য করব। ভুয়ো ভোটে নয়, প্রকৃত ভোটারের ভোটেই জিতব।’ এই কাজে ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা। মৃত কারও নাম আছে নাকি, তা নিয়ে তথ্য খতিয়ে দেখা হয়। নির্বাচন কমিশনে এই নিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। আরও একবার স্ক্রুটিনি করা হবে বলেও জানান পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী।
এছাড়া বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ভোটার তালিকায় বাংলাদেশিদের নাম ঢোকাতেই এই তৎপরপতা শাসকদলের। ভবানীপুরের আটজন তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলরকে নিয়ে বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন ফিরহাদ হাকিমও। সূত্রের খবর, ভবানীপুরে তৃণমূল কংগ্রেসকে সাংগঠনিকভাবে আরও মজবুত করার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ আবার বীরভূমে বৈঠকে বসেছেন অনুব্রত মণ্ডলরা। বিজেপিকে তোপ দেগে ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘বাঙালি, অবাঙালি বিভেদ করে বিজেপি। সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি করে বিজেপি। এখানে কোনওদিন দাঁত ফোটাতে পারবে না। আইওয়াশের ভাবনা নিয়ে থাকুক বিজেপি। মোদী আজ আছেন। কাল থাকবেন না। বিজেপি একটা একটা করে সব প্রতিষ্ঠান নষ্ট করে দিচ্ছে। এভাবে চললে ভারতের গণতান্ত্রিকতা নষ্ট হয়ে যাবে।’