জ়িনতকে খুঁজতে খুঁজতে ঝাড়খণ্ড থেকে এ রাজ্যে এসে হাজির হয়েছিল বাঘটি। তার পর থেকে বাংলার জঙ্গলমহলে ঘুরে বেড়াচ্ছে সে। তার পায়ের ছাপ মিলছে ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার জঙ্গল সংলগ্ন নানা জায়গায়। গত এক মাস ধরে এই প্রবণতা দেখে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, হয়তো জঙ্গলমহলেই স্থায়ী ভাবে আস্তানা গেড়েছে ঝাড়খণ্ডের বাঘটি।
গত রবিবারই পুরুলিয়ার মানবাজারে একটি বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছিল। বনকর্মীদের একাংশের অনুমান ছিল, গত বছর ডিসেম্বরের শেষে খাঁচাবন্দি হয়ে বাঘিনি জ়িনত ওড়িশায় ফিরে যাওয়ার পর যে বাঘটি ঝাড়খণ্ড থেকে এ রাজ্যে ঢুকেছিল, পায়ের ছাপটি তারই। এর পর শনিবার ফের বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গেল পুরুলিয়ার বান্দোয়ান এলাকায়। শুধু তা-ই নয়, বান্দোয়ান জঙ্গলের কাছে তালপাত গ্রামের এক বাসিন্দা অমলা মান্নার দাবি, জঙ্গল থেকে কাঠ কুড়িয়ে ফেরার পথে তিনি নিজের চোখে বাঘ দেখেছেন। বাঘটিকে চোখের সামনে রাস্তা পারাপার করতে দেখার পর তিনি দৌড়ে গ্রামে ফিরে আসেন এবং গ্রামবাসীদের জানান। এর পর বন দফতরেও খবর দেওয়া হয়। বনকর্মীরা গ্রামে যান। এলাকায় সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়। ড্রোন দিয়েও নজরদারি চলে। কিন্তু বাঘটির গলায় রেডিয়ো কলার না থাকায় তার সঠিক অবস্থান জানা যাচ্ছে না বলেই দাবি বনকর্মীদের একাংশের।
জ়িনত ওড়িশায় ফিরে যাওয়ার পরেই ঝাড়খণ্ডের দলমা থেকে একটি বাঘ সীমানা পেরিয়ে এ রাজ্যে ঢুকে পড়েছিল। কিছু দিনের মধ্যে ফিরেও গিয়েছিল বাঘটি। পরে আবার ফিরে আসে। এবং আবার ফিরে যায় ঝাড়খণ্ডে। যাতায়াত লেগেই ছিল। বনকর্মীদের অনুমান ছিল, জ়িনতকে ‘অনুসরণ’ করেই জঙ্গলমহলে ঢুকেছে বাঘটি। বনকর্মীদের একাংশ একান্ত আলোচনায় বাঘটিকে ‘জ়িনতের প্রেমিক’ বলেই সম্বোধন করে থাকেন।
বন দফতরের একটি সূত্রের দাবি, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলকে নিরাপদ আস্তানা বলেই মনে করছে বাঘটি। এই বনাঞ্চলে সে পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে। তাই সে লোকালয়েও ঢুকছে না। মানুষের কোনও ক্ষতিও করছে না। জঙ্গলের মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে। অন্তত এখনও পর্যন্ত তেমনই প্রবণতা দেখা গিয়েছে। বাঘটির নিরাপত্তার কারণেই তার সঠিক অবস্থান সম্পর্কে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাইছেন না বনকর্মীরা। তবে অনুমান, পুরুলিয়ার রাইকা ও ভাঁড়ারি পাহাড় সংলগ্ন এলাকাতেই বাঘটি রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।