আজকাল ওয়েবডেস্ক: শনিবার তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠনের বার্ষিক সভাকে ঘিরে যাদপুরে তান্ডব চালায় একদল 'পড়ুয়া'। ঘটনার অভিঘাত থেকে রেহাই পাননি খোদ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী।এদিন তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠনের ওয়েবকুপার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বৈঠক শুরু হওয়ার আগেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ শুরু হয় ছাত্রদের মধ্যে। তৃণমূল সমর্থিত ছাত্ররা অন্য পথে শিক্ষামন্ত্রীকে বৈঠকস্থলে পৌঁছে দেন। ওপেন এয়ার থিয়েটারে বৈঠক চলছিল। কিন্তু বৈঠক শেষ হওয়ার পরই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
শিক্ষামন্ত্রী বের হওয়ার সময় একদল ছাত্র তাঁর গাড়িকে ঘিরে হাঙ্গামা শুরু করে। ঘটনার চাপে চোট পান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁকে তৎক্ষণাৎ এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তিনি অতি বামপন্থী ছাত্র সংগঠনকে দায়ী করে বলেন, "এটা গুন্ডামি। ওরা আমার সঙ্গে দেখা করার দাবি তুলেছিল, আমি বলেছিলাম চারজনের সঙ্গে দেখা করব এবং সবার কথা শুনব। কিন্তু ওদের দাবি ৪০ জনের সাথে কথা বলতে হবে। আমাদের অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের উপর আক্রমণ করেছে। এটা উগ্র বামপন্থীদের কাজ। আমি বুঝতে পারছি না, এ কেমন গণতন্ত্র?”
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, "তৃণমূলপন্থী সংগঠন করা কি অপরাধ? গণতন্ত্রে ভিন্নমত থাকবে, কিন্তু তার মানে কি শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে প্রহার করা যাবে?" শিক্ষামন্ত্রী বলেন। এই হামলার পরও তিনি সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট জানান, “ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকুক আমি চাইনি।”
তিনি পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে বলেন, "আমরা শিক্ষার গেরুয়াকরণের বিরুদ্ধে সভা করছিলাম। ওরা কি বিজেপি শাসিত কোনো রাজ্যে এরকম কাণ্ড ঘটাতে পারত?"
শিক্ষামন্ত্রী উত্তেজনা প্রশমিত করতে গাড়ি থেকে নেমে ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা করার চেষ্টা করেন, কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি। তাঁর গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ওম প্রকাশ মিশ্রের উপরেও হামলা হয়।
ওম প্রকাশ মিশ্র ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় জানান আজকাল ডট ইন-কে, "যেভাবে উপাচার্যের সামনে শিক্ষামন্ত্রীকে হেনস্থা করা হয়েছে, তাতে লজ্জায় মাথা নত হয়ে গেছে। তবুও শিক্ষামন্ত্রী ধৈর্যের সঙ্গে পুরো পরিস্থিতি সামলেছেন। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার পর আমার উপর আক্রমণ করা হয়। আমার গাড়িতে হামলা হয় এবং আমাকে গাড়ি ছেড়ে পায়ে হেঁটে ক্যাম্পাস থেকে বেরোতে হয়। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাঁরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের সম্মান নষ্ট করেছে। কর্তৃপক্ষের উচিত তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া।"