• প্রয়াত কোচবিহারের বিখ্যাত রাসচক্রের প্রস্তুতকারক আলতাফ হোসেন, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
    প্রতিদিন | ০২ মার্চ ২০২৫
  • নব্যেন্দু হাজরা: তাঁর ধর্মীয় পরিচয় তিনি মুসলিম পরিবারের সন্তান। তবে যথাযথ নিয়ম মেনে হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব রাসমেলার রাসচক্র বানানোর গুরুভার ছিল তাঁর কাঁধে। দীর্ঘ রোগ ভোগের পর শনিবার রাতে প্রয়াত হলেন বাংলার ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক-বাহক আলতাফ হোসেন। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে কোচবিহারে। ৭০ বছর বয়সি আলতাফের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিতে অতীতে কোচবিহারের মহারাজ মদনমোহনের রাসচক্র তৈরির কাজের দায়িত্ব দিয়েছিলেন একটি ইসলাম ধর্মাবলম্বী পরিবারকে। বংশপরম্পরায় সেই গুরুভার দায়িত্ব সহকারে পালন করে এসেছিল আলতাফ মিয়াঁর পূর্বপুরুষরা। আলতাফ নিজেও গত ৪০ বছর ধরে বানিয়ে গিয়েছেন কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী রাসচক্র। তবে অসুস্থতার জন্য শেষ দুই বছর এই দায়িত্ব পান আলতাফের পুত্র আমিনুর। আলতাফের পুত্র আমিনুর হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই বাবা অসুস্থ ছিলেন। প্রায় ১০দিন এমজেএন মেডিকেলে ভর্তি থাকার পর শনিবার রাতে মারা গিয়েছেন।

    বিভাজনের কালনাগ যখন ছোবল মেরে চলেছে সম্প্রীতির ভারতকে, ঠিক সেই সময় আলতাফের মতো উজ্জ্বল নক্ষত্ররা বিভেদকামীদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় এই বাংলার সম্প্রীতির। কার্যত সে কথাই সোশাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আফতাফের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, ‘কোচবিহারের বিখ্যাত রাস মেলার রাসচক্রের প্রস্তুতকারক আলতাফ হোসেন ? এর প্রয়াণে আমি মর্মাহত। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।’ একইসঙ্গে তিনি লেখেন, ‘বাংলার যে ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্য তার অন্যতম ধারক-বাহক ছিলেন তিনি। তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই। আমি জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি শেষকৃত্যে পরিবারকে সবধরনের সাহায্য করার জন্য।’

    উল্লেখ্য, আলতাফের প্রয়াণ অবশ্য কোচবিহারের সম্প্রীতির এই উৎসবে কোনও ছেদ পড়েনি। পিতার অসুস্থতার কারণে গত ২ বছর ধরে রাসচক্র তৈরির গুরুদায়িত্ব সামলাচ্ছেন আমিনুর। বংশের রীতি মেনে আমিনুরই পাকাপাকিভাবে সেই হাল ধরবেন বলে জানিয়েছেন।
  • Link to this news (প্রতিদিন)