• হলদিয়ার বিজেপি বিধায়কের চিঠিতে স্বার্থের গন্ধ পাচ্ছে আরএসএস-এর মজদুর সংগঠন
    এই সময় | ০২ মার্চ ২০২৫
  • কিছু দিন আগে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে বিজেপি সমর্থিত দুই শ্রমিক সংগঠনকে সামনে রেখে যে চাপানউতোর সৃষ্টি হয়েছিল, এ বার তা আরও খোলামেলা। কয়েক দিন আগে বিজেপি বিধায়ক বনাম বিজেপি সাংসদের মতানৈক্যের ছবি সামনে উঠে এসেছিল। এ বার হলদিয়ার বিধায়কের এক চিঠিকে সামনে রেখে তরজা আরও প্রকট। ফেব্রুয়ারি মাসে শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে বন্দর চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি পাঠান হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। ভারতীয় মজদুর সংঘ বা বিএমএস-র দাবি, বিধায়কের এই পদক্ষেপ আসলে শ্রমিকদের বিষয়ে জোর খাটানো। শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে নালিশ জানানোর কথাও জানিয়েছে তারা। পাল্টা তাপসীর দাবি, তিনি শিল্পাঞ্চলের জনপ্রতিনিধি। শ্রমিক স্বার্থ নিয়ে তাঁকে তো ভাবতেই হবে।

    ভারতীয় মজদুর সংঘ বা বিএমএস (BMS) রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ বা আরএসএস-এর। হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে তাদেরই বিজেপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে সামনের সারিতে দেখা যায়। তবে হলদিয়ায় ভারতীয় জনতা মজদুর সেল বা বিজেএমসি (BJMC) রয়েছে, যারা বিজেপির ভাবাদর্শে বিশ্বাসী এবং তাদের একাধিক কর্মসূচিতে দেখা যায় হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডলকে। এই বিএমএস ও বিজেএমসি-এর আকচাআকচি বহু দিনের।

    সম্প্রতি তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় হলদিয়ায় বিএমএস-র এক অনুষ্ঠানে এসে বলেছিলেন, ‘সব কিছুর দেখভাল করবে ভারতীয় মজদুর সংগঠন, বিএমএস। এখানে এসে প্রতারণামূলক একটি সংগঠনের নাম শুনতে পাচ্ছি। তার নাম বিজেএমসি। দলীয় অনুশাসন অগ্রাহ্য করে আমাদের দলেরই কিছু কিছু লোকজন তা চালাচ্ছেন।’ জবাবে বিজেপি বিধায়ক বলেছিলেন, ‘সাংসদ হলদিয়া সম্পর্কে এখনও অত কিছু জানেন না। নতুন এসেছেন।’

    এই নিয়ে টানাপোড়েন যখন চলছে, এরই মধ্যে সামনে এল তাপসী মণ্ডলের লেখা একটি চিঠি। বিএমএস-র রাজ্য সভাপতি প্রদীপ বিজলি বলেন, ‘ব্যক্তিগত স্বার্থ থেকে বিজেপি বিধায়ক এই সব করছেন। দলের বাইরের লোকজনকে কাজে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করছেন। উনি যা খুশি করছেন, বলছেন। এর জন্য অন্য দলের লোকের কাছে অপদস্থ হতে হচ্ছে। এ রকম মনোভাব স্বেচ্ছাচারিতার জন্ম দেয়। এ ব্যাপারে আমরা সাংসদকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু বিধায়ক কাউকেই মানেন না। শ্রমিকদের মধ্যে দ্বিধা দ্বন্দ্ব চলছে। শীর্ষ নেতৃত্বকে না জানানো ছাড়া আর কোনও উপায় দেখছি না আমরা।’

    বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডলের পাল্টা বক্তব্য, ‘বিএমএস নিজেরাই বলে, ওরা অরাজনৈতিক সংগঠন। ওরা ওদের কাজ করছে। ওরা তো আমাকে কোনও দিন কোনও অনুষ্ঠানে ডাকে না। তাই আমি বিএমএস নিয়ে কোনও কথাই বলব না। বিধায়ক হিসেবে আমারও দায়িত্ব আছে শ্রমিক, কর্মচারীদের বিষয়ে কথা বলার। গত অগস্টে শ্রমিক কল্যাণের কিছু দাবিকে সামনে রেখে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছিলাম। ওই দাবিগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে কেন্দ্রীয় বন্দর, নৌপরিবহণ ও জলপথ মন্ত্রক। তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই চিঠি বন্দর চেয়ারম্যানের কাছে পাঠিয়েছি।’ তবে এ হিসাব যে এত সহজে দু’য়ে দু’য়ে চার হওয়ার নয়, তা উভয়পক্ষের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট।

  • Link to this news (এই সময়)