• ঋণের টাকা দিতে না পারায় এজেন্টের সামনেই কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী বধূ
    বর্তমান | ০২ মার্চ ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কান্দি: ঋণের কিস্তির টাকা দিতে না পেরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করলেন একজন গৃহবধূ। শুক্রবার রাতে সালার থানার পূর্ব শেখপাড়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। মৃতার নাম বিউটি বিবি(৩৮)। ওই দিন তিনি ঋণদানকারী সংস্থার এজেন্টের সামনেই বিষ খান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে সালার গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি মারা যান। এর প্রতিবাদে শনিবার ওই ঋণদান সংস্থার বন্ধ অফিসের সামনেই ধর্নায় বসেন বাসিন্দারা। পরে পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকমাস আগে ওই গৃহবধূ একটি মাইক্রো ফিন্যান্স কোম্পানির কাছ থেকে প্রায় ৯০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। প্রতি সপ্তাহে সেই ঋণের টাকা সুদ সহ কিস্তিতে শোধ করতে হতো তাঁকে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তিনি কিস্তির টাকা দিতে পারছিলেন না। বকেয়া সহ শুক্রবার ওই গৃহবধূকে কিস্তির পাঁচ হাজার টাকা দিতে হতো।


    মৃতার পরিবারের অভিযোগ, কিস্তির টাকা নিতে শুক্রবার বিকেলে ঋণদানকারী সংস্থার একজন এজেন্ট বিউটি বিবির বাড়িতে যায়। টাকা না পেয়ে ওই এজেন্ট তাঁকে অপমান করে বলে অভিযোগ। এরপরই গৃহবধূ বাজার থেকে কীটনাশক কিনে আনেন। এরপর ওই এজেন্টের সামনেই তিনি কীটনাশক খান। অবস্থা বেগতিক দেখে ওই এজেন্ট ওখান থেকে পালিয়ে যায়। ওই গৃহবধূকে প্রথমে সালার গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে রেফার করা। রাতে সেখানেই তিনি মারা যান। 


    মৃতার মা ফিরোজা বিবি বলেন, আমার মেয়ে ঋণ আদায়কারীর হাতে পায়ে ধরে বলছিল আজ টাকা দিতে পারব না। শনিবার যেভাবেই হোক পাঁচ হাজার টাকা মিটিয়ে দেবে। কিন্তু, এজেন্ট কোনও কথায় শুনছিল না। উল্টে আমার মেয়েকে বারবার মরে যাওয়ার কথা বলছিল। এরপরেই মেয়ে সকলের সামনে কীটনাশক খেয়ে ফেলে। ওই এজেন্ট তা দেখে পালিয়ে যায়। আমি দোষীর শাস্তি চাই।


    এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার সকালে ওই মাইক্রো ফিন্যান্স কোম্পানির অফিসের সামনে ধর্নায় বসেন গ্রামবাসীরা। যদিও এদিন ওই অফিস তালাবন্ধ ছিল। সংস্থার কর্মকর্তাদের মোবাইলও বন্ধ ছিল। খবর পেয়ে সালার থানার পুলিস ওখানে পৌঁছলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পুলিস জানিয়েছে, কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। 


    স্থানীয় ভরতপুর-২ ব্লকের বিডিও অনির্বাণ সেনগুপ্ত বলেন, খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। তবে এই ধরণের মাইক্রো ফিন্যান্স কোম্পানির বিরুদ্ধে আগে দু’বার ব্যবস্থা নেওয়া 


    হয়েছিল। এই ক্ষেত্রেও তদন্ত করা হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)