চিকিত্সায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ, তিনঘণ্টা অবরোধ
বর্তমান | ০২ মার্চ ২০২৫
সংবাদদাতা, হবিবপুর: চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে এক আদিবাসী যুবতীর মৃত্যুর অভিযোগে মালদহ নালাগোলা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে শনিবার হবিবপুর ব্লকের আইহো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় হবিবপুর থানার পুলিস। এই ব্যাপারে মালদহ মেডিকেল কলেজের এমএসভিপি প্রসেনজিৎকুমার বর বলেন, রোগীকে হাসপাতালে সবরকম চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেফটিক ছড়িয়ে পড়ায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের কোনও গাফিলতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতার পরিবার সূত্রে খবর, পরপর তিনবার রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। ছুটিও দেওয়া হয়। প্রথমবার চিকিৎসার পরেই যদি অপারেশন করা হত, তাহলে রোগীকে বাঁচানো যেত। সামান্য ফোঁড়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে চঞ্চলা মুর্মুর। প্রথমদিন চিকিৎসক সাময়িক ইনজেকশন দিয়ে ছেড়ে দেন। বেসরকারি এক সংস্থা থেকে রিপোর্ট করে নিয়ে আসতে বলেন পরিবারকে। সেইমতো পরেরদিন প্রায় ছ’হাজার টাকা খরচ করে বেসরকারি ওই সংস্থা থেকে একটি রিপোর্ট করানো হয়। সেখানে আরএক চিকিৎসক রোগীকে নার্সিংহোমে ভর্তির পরামর্শ দেন। প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হবে এবং রোগী সুস্থ হয়ে উঠবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। টাকা জোগাড় করতে পারেনি পরিবার। রোগী অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকলে রাতেই তাকে পুনরায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তখনও তাকে ইনজেকশন দিয়ে ছুটি দিয়ে দেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। তৃতীয়বার অনেক কাকুতি মিনতি করে অবশেষে ভর্তি নেওয়া হয় মালদহ মেডিক্যালে। কোনও চিকিৎসা না করেই প্রায় পাঁচ দিন বেডে ফেলে রাখা হয় রোগীকে। তারপরে অপারেশন করা হয়। গত শুক্রবার তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
মৃতার কাকু ডাক্তার মুর্মুর অভিযোগ, সামান্য ফোঁড়ার কারণে মারা যেতে হল রোগীকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইনফেকশন ছড়ানোর আগেই যদি অপারেশন করত, তাহলে রোগীকে বাঁচানো যেত। চিকিৎসায় গাফিলতির কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এদিন প্রায় তিনঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন হবিবপুর থানার আইসি শোভন কর্মকার। অনেক বোঝানোর পর পথ অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দারা। - নিজস্ব চিত্র