রাজ্যে ভূমি-ভূমিসংস্কার দপ্তরে ডিজিটাল লেনদেন রেকর্ড
বর্তমান | ০২ মার্চ ২০২৫
প্রীতেশ বসু, কলকাতা: ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে একের পর এক দপ্তরে অনলাইন পরিষেবা চালু করেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে পুর পরিষেবা, সমস্ত ক্ষেত্রেই রয়েছে অনলাইন ব্যবস্থা। অর্থদপ্তরের সমস্ত কাজই এখন হয় নির্দিষ্ট পোর্টালের মাধ্যমে। যেকোনও জনমুখী প্রকল্পের আবেদন করা যায় অনলাইনে। সেই সঙ্গে ভূমি ও ভূমিসংস্কার দপ্তরের মিউটেশন, জমির চরিত্র বদলের জন্য আবেদন, খাজনা প্রদান সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ ডিজিটাল মাধ্যমেই সারা যায়। এই ক্ষেত্রেই ২০২৪ সালে সারা দেশের মধ্যে নজির তৈরি করল বাংলা। ভূমি ও ভূমিসংস্কারের ক্ষেত্রে এ রাজ্যে ডিজিটাল লেনদেনের সংখ্যা ২৫ কোটি ২৭ লক্ষ।
এখন অনলাইনে খাজনা জমা দেওয়ার পাশাপাশি জমির মিউটেশন বা জমির চরিত্র বদলের আবেদন করতেও আর সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কেন্দ্রের ই-তাল পোর্টালের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলায় মোট ৩৯ কোটি ৩২ লক্ষ ই-ট্রানজাকসন বা অনলাইন লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ কোটি ২৭ লক্ষ লেনদেন হয়েছে শুধুমাত্র ভূমিরাজস্ব ক্ষেত্রে, যা ছাপিয়ে গিয়েছে অনলাইনে শংসাপত্রের আবেদন এবং প্রদান, কমার্শিয়াল ট্যাক্স, স্বাস্থ্য বিষয়ক অনলাইন পরিষেবা, সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশনের মতো অনলাইন পরিষেবাগুলিকে। তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, উওরপ্রদেশ, অসম, ওড়িশা সহ অন্যান্য রাজ্যকে ভূমিসংস্কার ক্ষেত্রে ডিজিটাল লেনদেনে পিছনে ফেলেছে বাংলা।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এর ফলে রাজস্ব আদায়েও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বেড়েছে জমির লিজ পুনর্নবীকরণের হার। অ-কৃষি জমির খাজনা দেওয়ার প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ভূমি রাজস্বের ক্ষেত্রে একটি আর্থিক বছর হয় ১৬ এপ্রিল থেকে পরের বছরের ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। ২০২৪ সালের ১৬ এপ্রিল থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত
রাজ্যে ভূমি রাজস্ব আদায় পৌঁছেছিল প্রায় ৭০০ কোটি টাকায়। চলতি আর্থিক বছর শেষে এই অঙ্ক অন্তত ১৩০০ কোটিতে পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। মূলত অ-কৃষি জমির খাজনা, দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি সরকারি জমির লিজ, কিছু ক্ষেত্রে খনি ও খনিজ পদার্থ বাবদ আদায়, ইটভাটা বাবদ আদায় বৃদ্ধি পাওয়াতেই সার্বিক এই সাফল্য বলে জানাচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারা। সম্প্রতি
জমির লিজ পুনর্নবীকরণের খরচ কমানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০২৩-২৪ সালে এই খাতে আদায় হয়েছিল এক হাজার কোটি টাকার সামান্য বেশি।