নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: ফাঁকা বাড়িতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এক কিশোরীকে ডেকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। কুকীর্তিতে সঙ্গ দিয়েছিল ওই কিশোরীর এক ‘বন্ধু’। বছর সতেরোর ওই ‘বন্ধু’ও এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। ‘মানিকজোড়’ অবশ্য একবার গণধর্ষণ করে ক্ষান্ত হয়নি। কুকীর্তি ক্যামেরাবন্দি করে, ভয় দেখিয়ে ফের ডেকে এনে ধর্ষণ করেছে ওই কিশোরীকে! তাতেও থামেনি অপরাধের পর্ব। ক্যামেরাবন্দি সেই ভিডিও সমাজমাধ্যমে ভাইরাল করে দিয়েছে দু’জনে। মধ্যমগ্রাম পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। বিষয়টি চাউর হতেই শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত কিশোরকে ধরে চলল উত্তম-মধ্যম। তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। কিশোরের অসমবয়সী বন্ধু, সেই যুবক এখন পলাতক। তাঁর খোঁজে অভিযান চালাচ্ছে পুলিস। নির্যাতিতাকে মেডিক্যাল টেস্টের পর হোমে পাঠানো হয়েছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরী ও দুই অভিযুক্ত প্রত্যেকেই মধ্যমগ্রাম পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পড়শি এক যুবক দীর্ঘদিন ধরে বিরক্ত করত নির্যাতিতাকে। সঙ্গে থাকত কিশোরীর ওই ‘বন্ধু’। এনিয়ে তাদের সতর্ক করেছিল স্থানীয়রা। কিন্তু শোধরায়নি কেউই। সদ্য শেষ হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে স্থানীয় একটি মাঠে নির্যাতিতার সঙ্গে ‘আড্ডা’ দিচ্ছিল ওই কিশোর। সন্ধ্যা হতেই বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে সে যায় স্ত্রী ছেড়ে যাওয়া ওই যুবকের বাড়িতে। সেখানেই ঘর বন্ধ করে কিশোরীকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযুক্তদের একজন যখন ওই অপকর্ম করছিল, তখন অন্যজন তা মোবাইল বন্দি করে।
শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত কিশোর কুকীর্তির সেই ফুটেজ দেখায় বন্ধুদের। মুহূর্তের মধ্যে তা চাউর হয়ে যায় গোটা এলাকায়। বিষয়টি নজরে আসতেই অভিযুক্ত কিশোরকে ল্যাম্প পোস্টে বেঁধে গণধোলাই দেয় স্থানীয়রা। মধ্যমগ্রাম থানার পুলিস এসে মারমুখী জনতার হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে। স্থানীয় একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, পলাতক যুবকের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। কিন্তু স্বামীর উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাত্রার কারণে স্ত্রী অন্যত্র থাকেন। একা বাড়িতে থাকার সুযোগ নিয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটাল সে। স্থানীয় বাসিন্দা অভিজিৎ সাহু, সমর্পিতা ঘোষ জানিয়েছেন, মেয়েটির সঙ্গে পড়শি কিশোরের বন্ধুত্ব রয়েছে। তারা একে অপরের পূর্ব পরিচিত। স্থানীয় কাউন্সিলার গোপাল ঘোষ বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। উভয়ই একে অপরের পরিচিত হওয়ার কারণেই এই ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। তবে আমরাও চাই দোষীদের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি। কারণ, এই ঘটনা এলাকার বদনাম করল।’
পুলিসের একটি সূত্রের দাবি, গোটা বিষয়টি পরিকল্পনামাফিক ঘটানো বলেই মনে হচ্ছে। আগেও এই কিশোরীর সঙ্গে একই ঘটনা ঘটিয়েছিল অভিযুক্তরা। তবে, এবার তাদের ছাড় নেই। বারাসত পুলিস জেলার সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়ার বক্তব্য, ‘গণধর্ষণের অভিযোগে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে। অপর এক অভিযুক্তকে ধরতে তল্লাশি চলছে।’