সুপ্রকাশ চক্রবর্তী, হাওড়া
পিচ গলিয়ে রাস্তা করার সময়ে বার বারই দূষণের অভিযোগ উঠেছে হাওড়ার শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে। তাই দূষণ কমাতে এ বার পেভার ব্লকের রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করল বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষ।
এই উদ্যোগে খুশি স্থানীয় বাসিন্দা থেকে, বোটানিক্যাল গার্ডেনে যারা প্রাতর্ভ্রমণ করতে বা বেড়াতে আসেন, সবাই। বোটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, গার্ডেনের প্রায় ১৮০০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ৮০ শতাংশ পেভার ব্লকের রাস্তা তৈরি করা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন পিচ গলানোর জন্য তৈরি হওয়া দূষণ কমানো যাবে, তেমনই মানুষের হাঁটারও সুবিধা হবে।
বোটানিক্যাল গার্ডেনে গিয়ে দেখা গেল, গার্ডেনের বেশির ভাগ বড় রাস্তা এখন পেভার ব্লক দিয়ে তৈরি হয়েছে। সাধারণত শহরের ফুটপাথে এই ধরনের ব্লক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বাকি অংশগুলিতেও রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। যাঁরা বি গার্ডেনে বেড়াতে আসেন, এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন তাঁরা।
গার্ডেনের নিত্যযাত্রীদের একজন, অমরেশ চট্টোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘গার্ডেনের কর্মচারীদের গাড়ি অনেক সময়ে দ্রুত গতিতে এই সব রাস্তা দিয়ে যায়। এর ফলে যাঁরা বেড়াতে আসেন, তাঁদের বেশ অসুবিধে হয়। পেভার ব্লকের রাস্তা তৈরি হওয়ার ফলে গাড়ির গতি অনেকটা কমে গিয়েছে। পাশাপাশি, পিচ গলিয়ে রাস্তা তৈরির ফলে যে দূষণ সৃষ্টি হয়, সেটাও হচ্ছে না। এটি বেশ ভালো একটি উদ্যোগ।’
বোটানিক্যাল গার্ডেন ডেইলি ওয়াকার্স অ্যাসোসিশনের সেক্রেটারি তাপস দাস জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা পিচ গলিয়ে রাস্তা তৈরির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন৷ এখন পেভার ব্লকের যে বিকল্প রাস্তা তৈরি হচ্ছে, তা খুবই সাধুবাদযোগ্য। এতে দূষণের সম্ভাবনা থাকবে না। তিনি বলেন, আমরা প্রাতর্ভ্রমণকারীদের কয়েকজন প্রতিনিধি মিলে গার্ডেন কর্তৃপক্ষকে ডেপুটেশন দিয়ে বাগানের নানা উন্নয়নের আবেদন জানিয়েছিলাম। আমাদের দাবি, বাগানের টয়লেটগুলোকে আধুনিক ও ব্যবহারযোগ্য করতে হবে। যাঁর নামে এই বাগান, সেই আচার্য জগদীশচন্দ্র বোসের একটি ব্রোঞ্জের আবক্ষ মূর্তি মূল প্রবেশদ্বারের সামনে বসাতে হবে। কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।’
বোটানিক্যাল গার্ডেনের জয়েন্ট ডিরেক্টর দেবেন্দর সিং বলেছেন, ‘পিচ গলিয়ে রাস্তা তৈরি করতে দূষণ তৈরি হয় বলে বরাবরই একটা অভিযোগ ছিল। সেই কথা মাথায় রেখেই বিকল্প ব্যবস্থার ব্যাপারে আমরা এজেন্সির সঙ্গে কথা বলি এবং তারপর এই পেভার ব্লকের রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়।’
বাগানে প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ ইতিমধ্যেই পেভার ব্লকের রাস্তা তৈরি হয়েছে। বাকি অংশও খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে বলে জানান তিনি। এতে একদিকে যেমন দূষণের সমস্যা কমবে, তেমনই পর্যটকদের হাঁটাচলাও নির্বিঘ্ন হবে।