চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায় দাবি জানিয়েছিলেন। সেই দাবি মেনে ট্রেনের ঘোষণাও হয়ে গেল। অথচ পরিকাঠামো কোথায় কতটা রয়েছে, কিংবা রেকের কী ব্যবস্থা হবে তা নিয়ে অন্ধকারে রেল আধিকারিকরা। আর তাই শিয়ালদা–জলপাইগুড়ি নতুন ট্রেন চালানোর কথা জানানো হলেও কবে থেকে তা ছুটবে, সেটা হলফ করে কেউ বলতে পারছেন না।
২৫ ফেব্রুয়ারি রেলবোর্ড থেকে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল এবং ইস্টার্ন রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে নোটিফিকেশন পাঠিয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, শিয়ালদহ থেকে জলপাইগুড়ি রোড পর্যন্ত একটি ট্রেন চালু করতে হবে। সেই ট্রেনের রেক হিসেবে ২২৩১৭ এবং ২২৩১৮ শিয়ালদহ জম্মু–তাওয়াই হামসাফার এক্সপ্রেসের রেক ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপর পাঁচ দিন কেটে গেলেও কবে থেকে এই ট্রেন চালু হবে তা জানাতে পারছে না রেল আধিকারিকরা। এর পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে।
জয়ন্ত জানিয়েছেন, কলকাতা যেতে রাতের ট্রেনের সমস্যা থাকায় তিনি রেলমন্ত্রীকে জলপাইগুড়ি থেকে শিয়ালদা যাওয়ার একটি ট্রেন চালুর কথা বলেছেন। এই ট্রেন চালুর ঘোষণায় উত্তরবঙ্গের মানুষ উপকৃত হবেন বলে এ দিন জানান সাংসদ। দেখা যায়, ২৫ ফেব্রুয়ারি রেল বোর্ড থেকে একটি নোটিফিকেশন পাঠানো হয়েছে। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, শিয়ালদা থেকে জলপাইগুড়ি রোড পর্যন্ত একটি ট্রেন চালানো হবে।
ট্রেনটি প্রতি শুক্রবার রাত ১১:৪০ মিনিটে শিয়ালদা থেকে ছেড়ে শনিবার দুপুর ১২ঃ১৫ মিনিটে জলপাইগুড়ি রোড পৌঁছবে। শনিবার রাত ৮.৩০ মিনিটে জলপাইগুড়ি রোড থেকে ছেড়ে রবিবার সকাল ৮ টা ১০ মিনিটে শিয়ালদহ পৌঁছবে। ১৯ কোচের এই ট্রেন ১৬টি এসি থ্রি টিয়ার থাকবে। অন্য যাত্রীবাহী কোচ আর থাকবে না। আপাতত হামসাফার এক্সপ্রেসের রেক ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশের পরেও রেল আধিকারিকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।
রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশন থেকে রেল বোর্ডে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, ট্রেনটি জলপাইগুড়ি রোডের পরিবর্তে নিউ কোচবিহার থেকে চালানো হোক। কারণ জলপাইগুড়ি রোডে পরিকাঠামো নেই। কোচবিহারে ট্রেনের সাফাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরিকাঠামো রয়েছে। এই বিষয় নিয়ে এন–এফ রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা বলেন, ‘নতুন ট্রেনের ঘোষণা হয়েছে। রেল বোর্ড থেকে নোটিফিকেশন করেছে। তবে কবে থেকে চালু হবে তা শীঘ্রই জানানো হবে। কারণ তার জন্য রেক– সহ যাবতীয় ব্যবস্থা ঠিক করেই ফের নোটিফিকেশন করা হবে।’
আবার রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার অভয় গণপত সনপ বলেন, কী নোটিফিকেশন হয়েছে জানি না। তবে ট্রেনটি নিউ কোচবিহার থেকে চালানোর জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’ যদিও জয়ন্ত রায় বলেন, ‘এই ট্রেনটি জলপাইগুড়ি রোড থেকেই চলবে। আর সেই ট্রেনে যাতে স্লিপার–সহ অন্য কোচ থাকে সেই প্রস্তাব বোর্ডে পাঠানো হবে। নিউ কোচবিহার এবং নিউ আলিপুরদুয়ারকে কভার করবে এ রকম আরেকটি ট্রেনের প্রস্তাবও দেওয়া হবে।’