এই সময়: সরকারি কর্মচারী হয়েও সরাসরি প্রোমোটিংয়ের ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে নবান্নের এক কর্মীকে চাকরি থেকে সরাসরি বহিষ্কার করা হল। তা নিয়ে রীতিমতো হুলস্থূল পড়ে গিয়েছে রাজ্য প্রশাসনের অন্দরে।
নবান্ন সূত্রের খবর, তাপস যশ নামে ওই কর্মী রাজ্য ‘হোম অ্যান্ড হিল অ্যাফেয়ার্স’ বিভাগে ইউডি অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে কাজ করতেন। তাঁকে এভাবে চাকরি থেকে বিতাড়িত করায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে কর্মী মহলে।
কারণ, সরকারি কর্মীদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত। কেউ পৈত্রিক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কেউ আবার কোচিং সেন্টারে পড়াতে যান। সেখান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা রোজগার করছেন তাঁরা। ফলে ভবিষ্যতে তাঁদের উপরও শাস্তির খাড়া নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
নবান্নের প্রশাসনিক কর্মিবর্গ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, তাপস যশ নামে ওই আধিকারিক ‘যশ রিয়েলটরস’ নামে একটি নির্মাণ সংস্থার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। তাঁর নামেই ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু হয়েছে। শুধু তাই নয়, নিজের নামে জমি কিনে মোট ২০টি ফ্ল্যাট বানিয়েছেন।
কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই সেই সব ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন। বিভাগীয় তদন্তে তার অকাট্য প্রমাণ মিলেছে। সেই কারণেই তাঁকে চাকরি থেকে বরাখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে তিনি কোনও অবসরকালীন সুযোগ–সুবিধা পাবেন না। তবে পিএফ অ্যাকাউন্টে যে টাকা জমা রয়েছে শুধুমাত্র সেটাই তিনি ফেরত পাবেন।
নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার ব্যাখ্যা, ১৯৮০ সালের ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভিসেস রুলস অনুযায়ী যাঁরা সরাসরি রাজ্য সরকারের চাকরি করেন তাঁদের কাজের সময় আট ঘণ্টা হলে তাঁরা আদতে সর্বক্ষণের কর্মী। সেজন্য অন্য কোনও লাভজনক সংস্থার সঙ্গে তাঁরা যুক্ত থাকতে পারেন না। সেই হিসাবে তাঁরা ব্যবসা–বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন না।
সেজন্য অনেকে স্ত্রী কিংবা পরিবারের অন্য কোনও সদস্যের নামে ব্যবসা করেন। নিজেদের নাম কোথাও ব্যবহার করেন না। কিন্তু তাপসবাবু সে সবের তোয়াক্কা করেননি। তিনি নিজের নামেই প্রোমোটিং সংস্থা খুলে বসেছেন এবং জমি কিনে ফ্ল্যাট বানিয়ে বিক্রি করেছেন। একজন সরকারি কর্মী হয়ে তিনি কখনই এই কাজ করতে পারেন না। সেই জন্যই তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনে কোনও যুক্তি দেখাতে পারেননি। এই কারণেই তাঁকে চাকরি খোয়াতে হচ্ছে।