• এক প্রাক্তনীর অর্থ সাহায্যে স্মার্ট ক্লাস পান্নালাল স্কুলে
    এই সময় | ০২ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়, কৃষ্ণনগর: প্রযুক্তিবিদ হিসেবে বিদেশের মাটিতে নাম-যশ, খ্যাতি অর্জন করেছেন। তবু ভোলেননি শিকড়কে। ছোটবেলার স্কুল নদিয়ার ‘কল্যাণী পান্নালাল ইনস্টিটিউশন’ থেকে প্রাক্তনী হয়েছেন ১৯৬৩ সালে। সেই স্কুলের উন্নতিতে এ বার পড়ুয়াদের জন্য গড়ে দিলেন স্মার্ট ক্লাসরুম। ব্যয় করলেন সাড়ে আঠেরো লক্ষ টাকা! শনিবার উদ্বোধনের সময়ে একদিকে ছিলেন বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির সভাপতি (উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যও) বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণীর উপ-পুরপ্রধান বলরাম মাঝি, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়ারা। আর প্রাক্তনী উজ্জ্বল দাশগুপ্ত এ দিন ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকেছেন আমেরিকার লুইসিয়ানা থেকে। ঝাঁ-চকচকে ক্লাস রুম পেয়ে খুশি পড়ুয়ারাও।

    বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘সরকারি স্কুল তো দূর, বহু বেসরকারি স্কুলেও এই মানের স্মার্ট ক্লাসরুম পাওয়া দুর্লভ। ৮০ টি সিট, দু’টি স্মার্ট বোর্ড, উন্নত মানের সাউন্ড সিস্টেম এবং 4k পিটিজে়ড ক্যামেরা ডুয়েল লেন্স রয়েছে এই ক্লাসরুমে। পরে প্রয়োজনে এসি বসানো হবে।’ স্কুল শিক্ষকদের মতে, এই ক্লাসরুমে পাঠ নিলে পড়ুয়াদের একঘেয়েমি কাটবে। সেই সঙ্গে প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কিত বিষয়গুলো বড় পর্দায় দেখে নিতেও পারবে তারা। সাড়ে আঠেরো লক্ষ টাকা ছাড়াও, অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং আনুষাঙ্গিক খরচ বাবদ আরও তিন লক্ষ টাকা দিয়েছেন উজ্জ্বল।

    সহকারী প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘আমরা জেনেছি উজ্জ্বল দাশগুপ্ত ছোটবেলায় খুবই অভাবী ঘরের সন্তান ছিলেন। কিন্তু দারিদ্র বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। বরং শক্তির উৎস এবং চ্যালেঞ্জিং মনোভাব জুগিয়েছিল তাঁকে।’ প্রসঙ্গত, ১৯৫৬ সালে পরিবারের সঙ্গে অসমের শিলং থেকে কল্যাণীতে এসে এই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন। এখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে শিবপুর বিই কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েন। এই রাজ্যে একাধিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করলেও ১৯৭৬-এ পাড়ি দেন আমেরিকা। টেক্সাস এবং লুইসিয়ানার প্রতিষ্ঠানে সুনামের সঙ্গে কাজ করে ১৯৯৫ সালে আমেরিকায় নিজেই একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

    বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির সভাপতি বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘এটা দৃষ্টান্ত। দেশে-বিদেশে থাকা স্কুলের প্রতিষ্ঠিত প্রাক্তনীরা এ ভাবে নিজের স্কুলকে মনে রাখলে আরও উপকৃত হবে স্কুল পড়ুয়ারা। দশম শ্রেণির এক ছাত্র বলে, ‘ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান ইত্যাদির প্রযুক্তিগত পাঠ সহায়তা পাওয়া যাবে। ক্লাসের পড়া হবে ক্লাসেই। বাইরে থেকে এক্সপার্ট ক্লাস নিলে, তাঁর ক্লাসও এখান থেকে ফলো করতে পারব। জরুরি কাজে স্কুলে না-আসতে পারলেও ভার্চুয়াল মোডে ক্লাসে হাজির থাকতে পারব আমরা।’

  • Link to this news (এই সময়)