পর্ণশ্রীতে মেয়ের সঙ্গে আত্মহত্যা করার আগে চা খেতে খেতে ট্যাংরা নিয়ে আলোচনা বাবার
হিন্দুস্তান টাইমস | ০২ মার্চ ২০২৫
ট্যাংরাকাণ্ডের ছায়া বেহালার পর্ণশ্রীতে। শুক্রবার গভীর রাতেই পর্ণশ্রীতে বাবা ও মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। তারপর থেকেই এই ঘটনায় ট্যাংরাকাণ্ডের ছায়া দেখতে পাচ্ছিলেন অনেকে। এবার টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্টে দাবি করা হল, মেয়েকে নিয়ে আত্মহত্যা করার আগে ট্যাংরাকাণ্ড নিয়ে পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন বাবা। রিপোর্ট অনুযায়ী, মৃত মেয়ের বয়স ২২ বছর। তিনি অটিজিমে আক্রান্ত ছিলেন। তাঁর নাম সৃজা দাস। এদিকে তাঁর বাবার নাম সজন দাস, বয়স ৫৩ বছর। এই আবহে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
রিপোর্ট অনুযায়ী, মহেশতলায় একদিন পরিচিতদের সঙ্গে চা খেতে খেতে ট্যাংরা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন সজন। এই আবহে মনোবিদরা দাবি করছেন, ট্যাংরার মতো ঘটনার প্রভাব পড়তে পারে মানুষের মনে। তখন এর পুনরাবৃত্তি ঘটনার প্রবণতা দেখা যেতে পারে। জানা গিয়েছে, পর্ণশ্রীতে সজনের বাড়ির একতলায় একটি অফিস ছিল। সেখান থেকেই দু'জনের দেহ উদ্ধাক করা হয়েছে। জানা যায়, শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ থানায় ফোন আসে এই দু'জনের মৃত্যুর খবর জানিয়ে। এদিকে পুলিশ যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন সজনের স্ত্রী জলি দাস বাড়িতেই ছিলেন।
পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় সজন এবং সৃজার দেহ। অফিসে পাখার হুক থেকে নাইলনের দড়ির সঙ্গে ঝুলছিলেন বাবা এবং মেয়ে। সজনের স্ত্রীকে জেরা করে পুলিশ। এদিকে প্রতিবেশীদেরও জেরা করা হয়। এই আবহে পুলিশ জানতে পারে, শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন সজন। সোয়া ১টা নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছে স্ত্রীকে ফোন করে তা জানান সজন। এর কয়েক ঘণ্টা পরে স্ত্রী সজনকে ফোন করেন। তবে কেউ ফোন তোলেনি। সন্ধ্যা হয়ে গেলে চিন্তিত হয়ে পড়েন জলি। তিনি রঞ্জিৎকুমার সিংহ নামে এক ব্যক্তিকে ফোন করে বিষয়টি জানান। তিনি বাড়িতে এসে অফিসে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান বাবা ও মেয়েকে। এদিকে দাবি করা হয়েছে, ওই ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করা ছিল না। পরে গভীর রাতে পুলিশ মৃতদেহ দু'টি ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যায়। তারপর তা ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হয়েছে।
মনে করা হচ্ছে, কন্যার শারীরিক পরিস্থিতি এবং চিকিৎসার খরচের কথা ভেবেই অবসাদে ভুগছিলেন সজন। উল্লেখ্য, সৃজা জন্ম থেকেই অটিজমে আক্রান্ত ছিলেন। এই আবহে তাঁর চিকিৎসার চলত বছর ভর। পর্ণশ্রীর ঘটনার নেপথ্যে কারণ আর্থিক সমস্যা কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই ট্যাংরায় বাড়ি থেকে একই পরিবারের তিন জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। ওই পরিবারের বাকি তিন সদস্য বাইপাসের ধারে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন। সেই ঘটনার ছায়া দেখা যাচ্ছে পর্ণশ্রীর ঘটনায়।