শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি প্রায় পিষে দিয়েছিল তাঁকে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই পড়ুয়া ইন্দ্রানুজ রায় এবার মুখ খুললেন। একদিকে যেখানে যাদবপুরে ব্রাত্যের 'গাড়িতে ছাত্রের চাপা পড়ার' অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করছে তৃণমূল। সেখানে ইন্দ্রানুজের গাড়ির সামনে পড়ে থাকার দৃশ্য সম্প্রচারিত হয়েছে খবরের চ্যানেলে। সেই ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানা গিয়েছে, ইন্দ্রানুজ আপাতত যাদবপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি। তাঁর সিটি স্ক্যান হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, পড়ুয়ার বাঁ চোখ ও মাথায় আঘাত গুরুতর। কিন্তু ঠিক কী হয়েছিল? তা নিয়ে এবার মুখ খুললেন ইন্দ্রানুজ।
শিক্ষামন্ত্রীর ‘গাড়ি চাপা’ পড়া পড়ুয়া জানালেন, ব্রাত্য বসু ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলনে এলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে পড়ুয়াদের সঙ্গে ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করবেন। তখন ব্রাত্য বসুকে সবাই বৈঠকে বসার জন্য ঘিরে ধরে, তখন তৃণমূলের ছাত্র নেতারা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে ও শিক্ষামন্ত্রীকে তাঁর গাড়িতে তুলে দেয়। শিক্ষামন্ত্রী গাড়িতে উঠতেই গতি বাড়ায় চালক। আন্দোলনকারীরা অনেকবার তাঁকে থামতে বললেও নাকি গাড়ির গতিবেগ আরও বাড়ানো হয়। সেই সময় শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি ঘিরে রেখেছিলেন বহু পড়ুয়া। ধাক্কাধাক্কিতেই নাকি গাড়ির সামনে পড়ে যান ইন্দ্রানুজ।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের উপর দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি চালানো হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা মিথ্যে বলে দাবি করল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের শীর্ষনেতা অরূপ বিশ্বাস বলেন, 'না, না। এসব বাজে কথা। শিক্ষামন্ত্রীকে হেনস্থা করেছে। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দিয়েছে। আজ শিক্ষামন্ত্রীকে নিগ্রহ করেছে। আমাদের শিক্ষাবন্ধুদের অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছে। এরা কারা? কোথায় গণতন্ত্র? কারা গণতন্ত্রের জন্য গলা ফাটাচ্ছে? ওরা যদি আমাদের দুর্বল ভাবে, তাহলে ওরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। আজ থেকে যাদবপুরে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লড়াই শুরু হল। আগামিদিনেও চলবে লড়াই।'
এদিকে কুণাল ঘোষ বলেন, ''এই ধরনের আজেবাজে কথা বলে কোনও লাভ নেই। কারণ ব্রাত্য বসু তো তাঁর ঘোষিত কর্মসূচিতে গিয়েছেন। তাঁকে বাধা দেওয়া হবে কেন? তাঁকে বাধা দেওয়া হবে কেন?' দেবাংশু ভট্টাচার্য আবার বলেন, 'দেখা যাচ্ছে, ব্রাত্য বসু যখন গাড়িতে বসছেন, তখন কয়েকজনকে বলতে শোনা যায়, ‘পাথর নিয়ে আয়, পাথর নিয়ে আয়।’ আর পাথর নিয়ে এসে সত্যি-সত্যি শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির কাচ ভেঙে দিলেন। গাড়িতে জুতো মারলেন। তারপরও শিক্ষামন্ত্রী অপেক্ষা করবেন নিজের মৃত্যুর জন্য? কারণ তিনি ভিতরে তো পুলিশ ডাকতে পারবেন না। আজ যদি শিক্ষামন্ত্রী ওই অবস্থা থেকে গাড়ি চালিয়ে বেরিয়ে না আসতেন, তাহলে গাড়ির কাচটা ভাঙার পরে তাঁর মাথা ফাটানো হত। তিনি বসে থাকতেন? তারপর কান্নাকাটি করছেন, কেন ছেলেটা ধাক্কা লেগে পড়ে গেল? বনেটের উপরে উঠে যদি বসে থাকেন, তাহলে ফুল-চন্দন দিয়ে পুজো করা হবে? আমি ব্রাত্য বসুর জায়গায় থাকলে আরও জোরে গাড়িটা চালিয়ে বেরোতাম ওখান থেকে।'