১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার অনুষ্ঠান ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড। জখম হন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। পরে বিকেলে যাদবপুরে রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ দেখান পড়ুয়াদের একাংশ। এই অশান্তির আঁচ রাতেও নেভেনি সেখানে। এই আবহে রাতের দিকে আন্দোলকারীদের হাতে হেনস্থার শিকার হন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। জানা গিয়েছে, যাদবপুরে সংঘর্ষে জখম পড়ুয়াদের দেখতে গতকাল কেপিসি হাসপাতালে গিয়েছিলেন উপাচার্য। সেখানেই হেনস্থার শিকার হয়ছিলেন তিনি। তাঁর পোশাক ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনা প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, 'আমাকে দেখে হঠাৎ এক দল ছাত্রী তেড়ে আসে এবং আমাকে ধাক্কা মারে। কয়েক জন ছাত্রী আমার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে দেয়। পরে হাসপাতালে থাকা কয়েকজন ছাত্র আমাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। পরে আমার গাড়ির সামনে অনেক ছাত্র চলে আসে। কোনও রকমে আমি ওখান থেকে বেরিয়ে যাই। পড়ুয়াদের এই ঘটনায় আমি হতবাক।'
এদিকে গতকাল রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তৃণমূল সমর্থিত কর্মী সংগঠন 'শিক্ষাবন্ধু'র অফিসে আগুন লাগানো হয় লে অভিযোগ উঠেছে। যদিও অগ্নিকাণ্ডের আসল কারণ জানা যায়নি। দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তৃণমূলপন্থী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মীদের অভিযোগ, এক দল দুষ্কৃতী তাঁদের কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছিল।
উল্লেখ্য, তৃণমূল প্রভাবিত ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলনে ব্রাত্য বসু যোগ দিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন ১ মার্চ। সেখানে প্রথম থেকেই গেটে অবরোধ করে রেখেছিলেন পড়ুয়ারা। ছাত্র সংসদের ভোটের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন পড়ুয়ারা। পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নম্বর গেট দিয়ে ব্রাত্য বসু প্রবেশ করেছিলেন ক্যাম্পাসে। তবে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় ব্রাত্যকে ঘিরে ধরেন আন্দোলনকারীরা। বামপন্থী এবং অতি বাম ছাত্র-ছাত্রীদের বিরুদ্ধে রীতিমতো তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে ইট ছোড়া হয়। ভাঙচুর চালানো হয় পাইলট গাড়ি। শিক্ষামন্ত্রী আহতও হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের পালটা দাবি, মন্ত্রীর গাড়িতে চাপা পড়েছেন এক ছাত্র। তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। এদিকে ব্রাত্য বসুও এসএসকেএমে গিয়েছিলেন অসুস্থ হয়ে। পরে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের উপর দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি চালানো হয়েছে বলে বামেরা যে অভিযোগ তুলছে, তা মিথ্যে বলে দাবি করল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের শীর্ষনেতা অরূপ বিশ্বাস বলেন, 'শিক্ষামন্ত্রীকে হেনস্থা করেছে। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দিয়েছে। আজ শিক্ষামন্ত্রীকে নিগ্রহ করেছে। আমাদের শিক্ষাবন্ধুদের অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছে। এরা কারা? কোথায় গণতন্ত্র? কারা গণতন্ত্রের জন্য গলা ফাটাচ্ছে? ওরা যদি আমাদের দুর্বল ভাবে, তাহলে ওরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। আজ থেকে যাদবপুরে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লড়াই শুরু হল। আগামিদিনেও চলবে লড়াই।'