• অস্মিকার পর মৌমিতা, বিরল রোগ থেকে বাঁচতে চাই ১৬ কোটি
    এই সময় | ০২ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়, মালদা: রানাঘাটের একরত্তি অস্মিকার বিরল রোগরে কথা প্রায় সকলেরই জানা। এ বার একই রোগে আক্রান্ত মালদার মানিকচকের ১৪ মাসের মৌমিতা। অস্মিকার মতো তাঁকে বাঁচাতেও প্রয়োজন ১৬ কোটির ইঞ্জেকশন। হাতে রয়েছে ঠিক ১০ মাস। কারণ, ডাক্তার বলেছেন, ২৪ ‍মাসের মধ্যেই তাকে দিতে হবে বহুমূল্য সেই ওষুধ।

    ভুতনি থানার হীরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নন্দিটোলার বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁর মেয়ে মৌমিতা মণ্ডল স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফিতে আক্রান্ত। স্ত্রী সুভদ্রা মণ্ডলকে নিয়ে রাতদিন এক করে সেই অর্থ জোগাতে মরিয়া তাঁরা। একমাত্র মেয়েকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছেন একরত্তির অভিভাবক। ঘুরে বেড়াচ্ছেন মানুষের দোরে দোরেও।

    দিনমজুরি করে যে পরিবার মাসে ১৬ হাজার টাকাও উপার্জন করতে পারে না। তাদের কাছে ১৬ কোটি টাকা জোগানো অনেক দূরের ভাবনা। মানিকচকের ওই শিশুর রোগের কথা জানে সংশ্লিষ্ট ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তর। বিএমওএইচ অভীকশঙ্কর কুমারের কথায়, ‘মালদা মেডিক্যাল ও কলকাতার এনআরএসের রিপোর্টে মৌমিতার এই জটিল রোগের কথা উল্লেখ করা রয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তর ও প্রশাসন সব সময়ে মেয়েটির ও তার পরিবারের পাশে রয়েছে।’

    রবীন্দ্রনাথের কথায়, ‘আট মাস বয়স থেকেই মেয়ের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। এখন ও ঠিকমতো দাঁড়াতে পারে না। সব সময়ে শুয়ে থাকে। হাত-পা অসাড় হয়ে আসছে। মেয়ের চিকিৎসায় ঘটি–বাটি বিক্রি করে দিতে হয়েছে। টিন, টালির ছাদের ঘরে থেকে এই সামান্য আয় দিয়ে সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছি।’

    তিনি আরও বলেন, ‘মেয়েকে কী ভাবে সুস্থ করে তুলব ভেবে পাচ্ছি না। মালদা মেডিক্যাল কলেজে মেয়েকে নিয়ে গেলে ওরাই প্রথম জানায় মেয়ের রোগের কথা। এনআরএসে গেলে তারাও সেই ১৬ কোটির ইঞ্জেকশন দেওয়ার কথাই বলে।’

    মা সুভদ্রা দিনমজুরি করে সংসার চালান। বললেন, ‘১৪ মাসের মেয়ের জন্য প্রশাসনের দারে দারে ঘুরছি। সবাই সাহায্যের হাত না বাড়িয়ে দিলে মেয়েটাকে বাঁচাতে পারব না।’ এই রোগের মাধ্যমে মূলত সেলিব্রাল অ্যাট্রোফি হয়ে থাকে। এ কথা জানিয়ে বিএমওএইচ আরও বলেন, ‘এই ধরনের রোগ বেশি বয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে তা বিরল থেকে বিরলতম। শরীরের ‍বিকাশ বন্ধ হয়ে গিয়ে ধীরে ধীরে শরীর শুকিয়ে যেতে থাকে।’

    এ দিকে মানিকচকের ভূতনির মৌমিতাকে সুস্থ জীবন ফিরিয়ে দিতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্তর থেকে সহযোগিতার আশ্বাস মিলেছে। বিষয়টি জা‍নতে পেরে মানিকচকের তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র বলেছেন, ‘একটা দুধের শিশুও যে এমন রোগে আক্রান্ত হতে পারে, ভেবেই খারাপ লাগছে। তবে আমি সব সময়ে ওদের পাশে রয়েছি।’

  • Link to this news (এই সময়)