ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবিকে সামনে রেখে শনিবার উত্তাল হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। শিক্ষামন্ত্রীকে নিগ্রহের অভিযোগ যেমন উঠেছে, একই ভাবে একাধিক অধ্যাপকের গায়ে হাত তোলারও অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির চাকায় এক ছাত্রের আহত হওয়ার অভিযোগও সামনে এসেছে। শনিবারের ঘটনায় ওঠা একাধিক প্রশ্নের জবাব রবিবার দিলেন ব্রাত্য বসু। তাঁর গাড়িতে ছাত্র আহত হওয়ার ঘটনায় যেমন দুঃখ প্রকাশ করেছেন, একই ভাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যাদবপুরে এর আগেও বহু বার এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। বাবুল সুপ্রিয় একবার গিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গেও এটা করা হয়েছে। যাদবপুরকে একটা মুক্তাঞ্চলে পরিণত করার চেষ্টা করা হয়েছে।’ এমনকী শনিবার রাতে আহত ছাত্রকে দেখতে গেলে উপাচার্যকে নিগৃহীত হতে হয় বলেও দাবি করেন শিক্ষামন্ত্রী।
শনিবার যাদবপুরে তৃণমূল সমর্থিত অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার সম্মেলন ছিল। সেখানেই যোগ দিতে গিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। অভিযোগ, বাম, অতি বাম ছাত্র সংগঠনগুলির তরফে ছাত্র সংসদের নির্বাচন কবে হবে, তা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে ডেপুটেশন দিতে চাওয়া হয়। কিন্তু এই ডেপুটেশন দেওয়াকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। উপাচার্য কার্যত দিশাহারা বোধ করেন বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, শনিবার ৪০-৫০ জন এসে হঠাৎ দাবি করে, সকলের সঙ্গে বসে ডেপুটেশন নিতে হবে। পাল্টা শিক্ষামন্ত্রী জানান, আলাদা করে ডেপুটেশন দিতে হবে। এসএফআই প্রথমে অনড় মনোভাব দেখালেও পড়ে আলাদা করেই ডেপুটেশন দেয়। ব্রাত্যর কথায়, ‘ওখানে ৪-৫টা অতি বাম সংগঠন নাকি ছিল। ওরা বলছিল, সকলকে একসঙ্গে নিয়ে বসে ডেপুটেশন নিতে হবে। সেটা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। ৫০ জনের সঙ্গে প্রকাশ্য জায়গায় বসে ডেপুটেশন দেওয়া হতো না, হইচই হতো।’
ব্রাত্যর বক্তব্য, বিকাশ ভবনে যাওয়ার কথাও বলা হয়। কিন্তু কোনও ডেপুটেশন দেওয়ার ইচ্ছাই ছিল না। ‘অশান্তি করবে, এটাই লক্ষ্য ছিল। হয়তো শারীরিক ভাবে হেনস্থা করতে চাইছিল। যে ভাবে অধ্যাপকদের টানা মেরে গিয়েছে। ছাত্র হয়ে অধ্যাপককে মারছে, খুবই দুর্ভাগ্যজনক’, বলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এই ঘটনায় উপাচার্যের কাছে বেশ কিছু রিপোর্টও তলব করেছেন বলে জানান তিনি।
সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। অন্য দিকে এ দিন সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। ব্রাত্য বলেন, এমন দিনে ছাত্র ধর্মঘট ডাকা দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়বাহী। তাঁরাও ডাকতে পারতেন, ডাকেননি। তৃণমূলের বিভিন্ন গণসংগঠন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর বিকালে মিছিল, মিটিং করবে। তবে কেন্দ্রীয় ভাবে কিছু করা হবে না বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে ব্রাত্য জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। সুব্রত বক্সীর সঙ্গেও সকালে কথা বলেছেন।