সোমবার থেকেই শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। রাজ্যের অন্যান্যদের সঙ্গেই এই পরীক্ষায় বসতে চলেছে মেদিনীপুরের পঞ্চকন্যা। তারা অন্যদের তুলনায় আলাদা। কারণ বাবা-মাকে হারিয়ে বা পরিত্যক্ত হয়ে তারা বড় হয়েছে মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বালিকা ভবনে। সরকারি এই হোমেই কেটেছে তাঁদের শৈশব থেকে কৈশোর। এখানে থেকেই পড়াশোনা করে চলতি বছরের উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছে ওই পাঁচ জন। তারা যখন পরীক্ষা দিতে বসতে চলেছে তখন আশায় বুক বাঁধছে জেলা প্রশাসনও। আধিকারিকদের আশা, এই পঞ্চকন্যা সাহস জোগাবে অন্য উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদেরও।
মেদিনীপুর শহরের উপকন্ঠে রাঙামাটি এলাকায় অবস্থিত সরকারি হোম ‘বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন’। সেখানেই আরও অনেকের সঙ্গে শৈশব থেকে বড় হয়েছেন এই পাঁচ জনও। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ওই পাঁচ জনকে উদ্ধার করা হয়েছ পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া এবং ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে। সরকারি এই হোমে থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ, গান, আবৃত্তি, হস্তশিল্পেরও তালিম নিয়েছে তারা।
এই হোমের ওই পাঁচ জন রাঙামাটি কিরণময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ছাত্রী। তাদের পরীক্ষাকেন্দ্র মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ। ওই পাঁচ জন জানিয়েছে, তাদের আশা পরীক্ষায় ভালো ফল হবে । প্রশাসনের তরফে তাদের জন্য টিউশনের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে তারা।
হোম কর্তৃপক্ষ এবং জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যারা এ বার উচ্চ মাধ্যমিক দিচ্ছে তাদের কারোর বাবা-মা মেয়েদের ছেড়ে চলে যায়, আবার কারোর বাবা-মা দুজনেই মারা গিয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) কেম্পা হোন্নাইয়া জানান, এই হোম থেকে যে পাঁচ জন কিশোরী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছে তাদেরকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। তাদের পরীক্ষার ফল ভালো হবে বলে আশা করেন তিনি। একই কথা জানিয়েছেন বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন হোমের সুপার আরতি সিং।
ওই পাঁচ জন জানিয়েছে, তারা আগামী দিনেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায়। কেউ শিক্ষিকা হওয়ার বা পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে।