• 'বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বেরিয়ে এসো দেখে নেব', যাদবপুরের বাম-অতি বাম পড়ুয়াদের হুঁশিয়ারি সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জির...
    আজকাল | ০৩ মার্চ ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি: শনিবার ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভা ঘিরে বেনজির অশান্তির সাক্ষী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। হামলার মুখে পড়তে হয় স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রীকে। আহত হয়ে এসএসকেএমে প্রাথমিক চিকিৎসা করান মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এসবের জন্য শিক্ষামন্ত্রী নিশানা করেন অতি-বাম ছাত্র সংগঠনগুলিকে। যাদবপুর কাণ্ডে উত্তাল রাজ্যরাজনীতি। যা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি।

    সাংসদের দাবি, বাম ও অতি বামদের এমন আচরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বদনাম হচ্ছে। রবিবার বৈদ্যবাটিতে এক রক্তদান শিবিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে সিপিএমকে হুঁশিয়ারি দেন কল্যাণ বাবু। তিনি বলেন, "শনিবার যাদবপুরে একটি অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রীকে ঘিরে ধরে গাড়ির মধ্যে ঠেলা, ধাক্কা মারা হল। এটা আবার কি ধরনের আচরণ? আপনার যদি কোনও ডিমান্ড থাকে তাহলে সেই ডিমান্ডটাকে অফিশিয়ালি জানাতে পারতেন। যেতে পারতেন। শিক্ষামন্ত্রী সেখানে গেছে বলে তাঁর ওপর ঝাপিয়ে পড়তে হবে? এটা আবার কি। বিগত সাত আট বছর ধরে দেখছি, যাদবপুরের বাম এবং অতিবাম- এরা এমন একটা কাজ করছে যাতে যাদবপুর ইউনিভার্সিটির বদনাম হচ্ছে। এর আগে দেখেছি র‍্যাগিংএর জন্য ছাত্র মৃত্যু হয়েছে। তার আগে আরও অনেক ঘটনা ঘটেছে। এই যাদবপুর ইউনিভার্সিটির বাম এবং অতি বামরা আরজি কর নিয়ে ধুন্ধুমার করেছিল। এরা সিপিএম। এরসব গুন্ডামি ছাড়া আর কিছুই করতে জানে না।"

    সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক গতকালের ঘটনাকে 'নাটক' বলেছিলেন। তাঁকে তোপ দেগে শ্রীরামপুরের সাংসদ বলেন, "মহম্মদ সেলিম মূলত একটি গুন্ডা দলের লোক। খুন ধর্ষণ এই সবে তিনি মাস্টার ছিলেন। এখনও খুঁজলে দেখা যাবে তার বুকে রক্তের দাগ লেগে আছে, এত খুন করেছে। এই সিপিএমের কাছে কোনও ভদ্রতাও পাবে না, সভ্যতাও পাবে না। সব জায়গাতেই শূন্য হয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। তারপরেও ওরা বাঁদরামো করছে। অসভ্যতা করছে। এইতো ডানকুনিতে কয়েকদিন আগে ওদের রাজ্য সম্মেলন হলো। তিন দিন ধরে চলল সম্মেলন। কোথাও কি এতটুকু গন্ডগোল হয়েছে? কেউ করতে পেরেছে? আপনারা যদি ব্রাত্য বসুর মতো শিক্ষামন্ত্রীকে মারেন, তাহলে আপনাদের রাজ্য সম্মেলনে সবাই তো মার খেয়েই চলে যেত। কিন্তু আমরা এইসব করি না। এসব অসভ্যতা করবেন না। তাহলে কিন্তু আগামী দিনে আপনারাও মিছিল মিটিং করতে পারবেন না। আর যদি ভাবেন যাদবপুরে এসেছে বলে মস্তানি করে নেব, তাহলে পশ্চিমবঙ্গে আরও কিন্তু অনেক মাঠ খালি আছে। সেখানেও আমাদের ছেলেরা আছে। আপনাদের দাবি থাকতেই পারে, কিন্তু প্রত্যেকটা দাবি-দাওয়া পেশ করার একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে।"

    কল্যাণ বাবুর প্রশ্ন, "আপনারা (অতি বাম ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা) কি মন্ত্রীর কাছে আগে থেকে কোনও এপয়েন্টমেন্ট চেয়েছিলেন? আমি রাস্তা দিয়ে একাই যাচ্ছি, হঠাৎ করে বিজেপি আর সিপিএমের লোকরা এসে যদি আমাকে বলে, এটা আপনাকে করতে হবে তাহলে সেটা কি সঠিক হবে? ক'দিন লাগবে একটা বিজেপির এমপি বা কোনও সিপিএমের নেতাকে রাস্তায় ধরে নিতে! এসব আমরা কেউ সহ্য করব না। এসব সহ্য করার জন্য আমরা আসিনি।"

    অতীতের বাম বিরোধী আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তৃণমূল সাংসদ বলেন, "সিপিএমের বিরুদ্ধে আমরা অনেক আন্দোলন করে এসেছি। তখন অনেক মার খেয়েছি। মার খেয়েও দল করেছি। আমরা মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে সিপিএমকে হটিয়েছি। পশ্চিমবাংলায় এমন কোনও জায়গা নেই, এমন কোন পাড়া নেই, এমন কোন গ্রাম নেই যেখানে সিপিএমের অত্যাচার হয়নি। কিন্তু সেই অত্যাচার আমরা সবাই মিলে রুখে দিয়েছি। তবে এরপর যদি এই ঘটনা আর দেখি রাজ্য জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস কিন্তু রুখে দাঁড়াবে।"

    সবশেষে কল্যান ব্য়ানার্জীর চ্যালেঞ্জ, "আমি রবীন্দ্রসংগীত নজরুল গীতিতে বিশ্বাসী নই। যাঁরা বিশ্বাসী তাঁরা বিশ্বাসী। আমি ২০১০ সালে একটা ঘটনা বলি, আমি তখন সাংসদ হয়েছি। সুদর্শন রায়চৌধুরী তখন সিপিএমের শিক্ষামন্ত্রী ছিল। চুঁচুড়ায় প্রোগ্রাম করতে গিয়েছিলেন। তখন পাপ্পুরা তাঁকে ঘেরাও করে রেখেছিল। তখন শিক্ষামন্ত্রী আমাকে ফোন করেছিলেন। আমি এক ঝটকায় তাঁদেরকে বলি আগে শিক্ষামন্ত্রীকে ছাড়ো, তারপর অন্য কথা হবে। আমরা এই কালচারে বিশ্বাস করি। যাদবপুরে বাম, অতিবাম ওসব শক্তিশালী ছেলেমেয়েদের আমাদের দেখা আছে। নিজের পাড়ায় কুত্তাও রাজা হয়। বাইরে বেরিয়ে এসো দেখে নেব।"
  • Link to this news (আজকাল)