বাগডোগরার জঙ্গলে চার হাজার নাগরিককে নিয়ে মেয়রের পিকনিক
বর্তমান | ০৩ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: শাল, সেগুন, গামারির ঘন জঙ্গল। অসংখ্য পাখি ও ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। তাতে উঁকি মারছে সূর্য। পাশে সবুজ চা বাগান। এমন প্রাকৃতিক পরিবেশে মঞ্চ বেঁধে কবিতা, নাচ, গান ও ক্যুইজের আসর। রবিবার নকশালবাড়ির ট্রি-ল্যান্ডে শহরের প্রায় চার হাজার নাগরিককে নিয়ে এভাবেই পিকনিক করলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে ছিল শহরের উন্নয়ন নিয়ে নাগরিকদের মতামত গ্রহণ ও মধ্যাহ্ন ভোজ। মেনুতে ছিল ভাত, ডাল, ভাজা থেকে মাছ, মাংস ও চাটনি। ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে মেয়রের এমন উদ্যোগ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। স্থানীয় রাজনীতিতে এনিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, সামনেই বিধানসভা ভোট। তাই এমন অভিনব কায়দায় গা ঘামাতে শুরু করলেন মেয়র। যদিও মেয়রের বক্তব্য, এর সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও সম্পর্ক নেই। নাগরিকদের সঙ্গে কিছুটা অন্য মুডে দিন কাটালাম। এই প্রথম এ ধরনের পিকনিক হল।
এদিন সকালে পিকনিকে যোগদানকারীদের বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয় ট্রি-ল্যান্ডে। তা নকশালবাড়ি ব্লকের আপার বাগডোগরা গ্রাম পঞ্চায়েতে। দিনভর সেখানে মঞ্চ বেঁধে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা চেয়ারম্যান (সমতল) অলোক চক্রবর্তী স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন মেয়র। কয়েকজন কাউন্সিলার গান ও নাচ করেন। কচিকাঁচা ও মাঝ বয়সিদের নিয়ে হয় গানের লড়াই ও ক্যুইজ। মেয়রকে কাছে পেয়ে অনেকে ঘিরে ধরেন। কেউ রাস্তা ও পানীয় জলের সমস্যার কথা বলেন। আবার কেউ কেউ মাটির নীচ দিয়ে বিদ্যুতের তার ও রান্নার গ্যাসের লাইন পাতা, বিকল্প রাস্তা তৈরির ভাবনার প্রশংসা করেন। মেয়র বলেন, বছরের অন্যান্য সময় ব্যস্ততার মধ্যদিয়ে কাটে। সকলের খোঁজ নেওয়া সম্ভব নয়। তাই এদিন ৪৭টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে অন্য রকমভাবে কাটালাম। শহরে এ ধরনের পিকনিক এই প্রথম হল। নাগরিকদের অভাব, অভিযোগ, পরামর্শ সবটাই শুনেছি।
প্রতিটি ওয়ার্ডের পুরুষ ও মহিলারা ছিলেন। নাগরিকরা ছাড়াও পিকনিকে শামিল হয়েছিলেন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভানেত্রী (সমতল) পাপিয়া ঘোষ, মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ, ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার প্রমুখ। স্থানীয় সূত্রের খবর, পিকনিকে অসংখ্য বাস ও ছোট গাড়িতে চেপে প্রায় চার হাজার নাগরিক যোগ দিয়েছিলেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি, সেখানে মধ্যাহ্নভোজ করানো হয়।
মধ্যাহ্ন ভোজ সেরে কয়েকজন বলেন, বনদপ্তরের বাগডোগরা রেঞ্জের অধীনে থাকা এই জঙ্গলে মাঝেমধ্যেই হাতি ও চিতাবাঘ বের হয়। গা ছমছম করা এই ঘনজঙ্গলে মেয়রের উদ্যোগে কিছুটা সময় আনন্দ করে কাটালাম। নতুন প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে পরিচিতি হল। কেউ কেউ আবার বলেন, আগে কোনওদিন কোনও মেয়র এমন অনুষ্ঠান করেননি। মেয়রের এই উদ্যোগ মনে থাকবে। নিজস্ব চিত্র