এবার বালুরঘাট হাসপাতালে ২৪ জন চিকিৎসক পাঠাবে রাজ্য
বর্তমান | ০৩ মার্চ ২০২৫
সংবাদদাতা, পতিরাম: দীর্ঘদিন ধরে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কট চলছে। অনেক বিভাগে নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক। এমনকি ময়নাতদন্তের জন্যও ফরেন্সিক বিভাগও খালি। সেই সমস্যা মেটাতে এবার পাশে দাঁড়াল স্বাস্থ্য ভবন। এই হাসপাতালের জন্য ২৪ জন চিকিৎসককে পাঠানোর অনুমোদন দিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। দীর্ঘ কয়েক বছর পর শূন্যস্থান পূরণের খবরে আশার আলো পরিষেবার ক্ষেত্রে। এবার আর পরিষেবা নিতে গিয়ে হয়রান হয়ে ফিরতে হবে না বলে মনে করছেন বাসিন্দারা।
এর আগে অনেকবার জুনিয়র চিকিত্সক নেওয়ার জন্য ইন্টারভিউ নিয়েছিল হাসপাতাল। সব সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হলেও কিন্তু তাদের অনেকে কাজে যোগ দেননি। ফলে পরিষেবার মান বাড়ানোর চেষ্টা করলেও তাতে খুব একটা কাজ হয়নি। তার উপর গোদের উপর বিষফোড়ার মতো সম্প্রতি কয়েক জন চিকিত্সক উচ্চতর পড়াশোনার জন্য হাসপাতাল ছাড়েন। তারপরেই পরিস্থিতি ঘোরালো হয়। প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম চিকিত্সক নিয়েই পরিষেবা দিতে হচ্ছিল। যার জেরে মাঝেমধ্যেই গাফিলতির অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন রোগী ও পরিজনরা। বারকয়েক তো ধুন্ধুমার বেধে গিয়েছিল হাসপাতালে। তবে, চিকিত্সক অনেক কম থাকার পাশাপাশি একাংশের গা ছাড়া মনোভাবও পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার পিছনে একটা বড়ো বাধা বলে মনে করছেন একাংশ। তাঁদের দিকে কড়া নজর রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
তবে, একলপ্তে ২৪ জন চিকিত্সক এলে পরিষেবার হাল ফিরবে বলে মনে করছে সব মহল। কিছুদিন আগে হাসপাতালের পরিষেবার মান দেখতে রাজ্য থেকে প্রতিনিধি দল এসেছিল। তাঁদেরও পর্যাপ্ত চিকিত্সক না থাকা এবং অন্যান্য সমস্যার কথা জানানো হয়েছিল। তারপরেই হয়তো পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে দ্রুত একঝাঁক চিকিত্সক পাঠানো হচ্ছে। জেলা হাসপাতাল সূত্রে খবর, চলতি মাসেই ওই চিকিৎসকরা হাসপাতালে কাজে যোগ দেবেন। তাঁরা এলে হাসপাতালে যেমন চিকিৎসক সঙ্কট মিটবে, পরিষেবাও ভালো হবে।
হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, আমাদের হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসক সঙ্কট রয়েছে। আমরা এনিয়ে বহুবার স্বাস্থ্য ভবনে জানিয়েছিলাম। একাধিকবার দরবার করেছি। অবশেষে হাসপাতালে প্রায় ২৪ জন চিকিৎসক পাঠানোর ব্যাপারে স্বাস্থ্য ভবন অনুমোদন দিয়েছে। তার মধ্যে অনেক বিভাগের চিকিৎসক রয়েছেন। অনেকদিন ময়নাতদন্তের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন না। সেই চিকিৎসকও এবার আমরা পাচ্ছি। চলতি মাসেই সবাই কাজে যোগ দেবেন। এতে পরিষেবা আরও ভালো হবে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, একাধিক বিভাগের চিকিৎসকদের বাছাই পর্ব হয়ে গিয়েছে। গাইনোর ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা দুই। বাকি বিভাগগুলির বাছাই দ্রুত হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এমডি পড়ার পর তিন বছরের জন্য সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসেবে ওই চিকিৎসকদের পাঠানো হচ্ছে। তবে আগেও একাধিক জুনিয়র চিকিৎসককে জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের অনেকে কাজে যোগ দেয়নি। গাইনো বিভাগে নতুন করে দুই চিকিৎসক যোগ দিলে মোট আটজন নিয়ে আরও ভালো পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে। অন্যদিকে ফরেন্সিক বিভাগের চিকিৎসক না থাকায় অনেক সময় জটিলতা দেখা দিলে রেফার করা হতো। এখন সেটা আর হবে না।