কেন্দ্রীয় রাজস্ব বিভাগের অভিযান, কোটি টাকার সোনা সহ গ্রেপ্তার ২
বর্তমান | ০৩ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: পাচারের আগেই ফের কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকদের হাতে বিদেশি সোনা সহ গ্রেপ্তার হল দুই পাচারকারী। ডিআরআই জানিয়েছে, ধৃতরা হল লিটন ধর ও চন্দন পাল। তাদের বাড়ি যথাক্রমে নদীয়া জেলার রানাঘাট ও তুফানগঞ্জে। ধৃতদের হেফাজত থেকে এক কেজির বেশি বিদেশি সোনা উদ্ধার হয়েছে। রবিবার ধৃতদের শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হলে ধৃতদের একদিনের জেল হেফাজতে পাঠানো নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আজ, সোমবার তাদের ফের আদালতে তোলা হবে।
বিদেশ থেকে বাংলাদেশ হয়ে সোনা পাচারের খবর পান কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগের অফিসাররা। এরপর থেকেই উত্তরবঙ্গজুড়ে বিভিন্ন টোল প্লাজায় নজরদারি বাড়াতে থাকেন ডিআরআইয়ের গোয়েন্দারা। একাধিক টোল গেটের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বারবার করে খতিয়ে দেখতে থাকেন তাঁরা। তবে কিছুতেই পাচারকারীদের হদিশ পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপরেই বাংলাদেশ সীমান্ত থাকা কোচবিহার জেলার নজরদারি বাড়ান গোয়েন্দারা। বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে শনিবার কোচবিহার জেলার ঘোঘারকুটি টোল প্লাজায় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাসে অভিযান চালান গোয়েন্দারা। এরপরই সন্দেজনক ওই দুই জনের দেহে তল্লাশি চালানো হয়। তবে তল্লাশি প্রক্রিয়া শুরু হতেই এলাকায় প্রচুর মানুষ ভিড় করতে শুরু করে। এরপরই ‘স্পট সমন’ দিয়ে দু’জনকে শিলিগুড়ির কলেজপাড়ায় কেন্দ্রীয় রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগের উত্তরবঙ্গ শাখার অফিসে নিয়ে আসা হয়। এরপর দেহে তল্লাশি চালিয়ে লিটন ধরের হেফাজত থেকে পাঁচটি এবং চন্দন পালের কাছ থেকে ছ’টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা। উদ্ধার হওয়া সোনার বাজার মূল্য ১ কোটি ৮ লক্ষ ৬৫ হাজার ১৪৫ টাকা। এরপর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগের আইনজীবী রতন বণিক বলেন, বিদেশি সোনা পাচার করার চেষ্টার অভিযোগে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ডিআরআই। তাদের একদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ঘটনার তদন্ত করছেন দপ্তরে অফিসাররা।
ডিআরআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে বিভিন্ন নামীদামি কোম্পানির সোনা চোরাপথে বাংলাদেশ হয়ে এদেশে এসেছিল। সেই সোনা পাচার করার জন্য ধৃতদের কাজে লাগিয়েছিল সোনা পাচারকারী চক্রের পান্ডারা। সেই মোতাবেক মোটা টাকা পাওয়ার আশায় এই কাজে যুক্ত হয়েছিল ধৃতরা। রানাঘাট ও তুফানগঞ্জ থেকে নিযুক্ত এই দুই পাচারকারীর কাছে যে ১১টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার হয়েছে, তার প্রত্যেকটির ওজন ১১৬ গ্রাম করে। উদ্ধার হওয়া সোনার মোট ওজন ১ কেজি ২৭৬ গ্রাম। কোচবিহার থেকে ওই সোনা বিহারের কিষানগঞ্জে পাচারের চেষ্টা করছিল পাচারকারীরা। তবে তার আগেই কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগের গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ে। প্রাথমিক জেরায় ধৃতরা ভেঙে পড়ে এবং কার কাছ থেকে সোনা নিয়েছে এবং সেই সোনা কাকে দেওয়া হতো, সেই বিষয়ে বেশকিছু নাম বলেছে। সেই সকল ব্যক্তির সন্ধান শুরু করেছেন গোয়েন্দারা। এছাড়াও ধৃতদের দেওয়ার তথ্য খতিয়ে দেখে সোনা পাচারকারী চক্রের মূল পান্ডার নাগাল পেতে চাইছে ডিআরআই। নিজস্ব চিত্র