মাত্র ৪৫ শতাংশ ইউনিফর্ম তৈরি হয়েছে, প্রতি জেলায় নজরদারির নির্দেশ নবান্নের
বর্তমান | ০৩ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের প্রতি বছর বিনামূল্যে দু’সেট করে ইউনিফর্ম দেয় রাজ্য। এবছর মার্চ মাসে প্রথম সেট দেওয়া চালু করার টার্গেট সামনে রেখে এগচ্ছে নবান্ন। তা সুনিশ্চিত করতে কোমর বেঁধে কাজে নেমেছে রাজ্য প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট আধিকারিক-কর্মীরা। ইউনিফর্ম সেলাইয়ের দায়িত্বে রয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠী। প্রয়োজনীয় কাপড় উৎপাদন হয় রাজ্যেই। ফলে জোগানের কোনও সমস্যা নেই। এই পরিস্থিতিতে স্বনির্ভর গোষ্ঠির সদস্যদের দিয়ে দ্রুত সেলাইয়ের কাজ শেষ করানো গেলেই সময়ের মধ্যে ইউনিফর্ম দেওয়া চালু করা যাবে বলেই মত প্রশাসনিক মহলের। সেই ক্ষেত্রে প্রত্যেক জেলা প্রশাসনকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক থেকে জেলাগুলিকে এই বার্তা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে সেই সমস্ত জেলাগুলিকে, যাদের এই কাজের হার ৩০ শতাংশের নীচে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, উত্তর দিনাজপুর (২৯ শতাংশ), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (২২ শতাংশ), নদীয়া (২০ শতাংশ), পুরুলিয়া (পাঁচ শতাংশ), পূর্ব মেদিনীপুর (পাঁচ শতাংশ) সহ সাত জেলায় ইউনিফর্ম তৈরির হার সম্তোষজনক না হওয়ায় রাজ্যের রিপোর্টে এই জেলাগুলিকে বিশেষ ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদও (২৬ শতাংশ) রয়েছে তালিকায়। তবে কোচবিহার (৮৭ শতাশ), ঝাড়গ্রাম (৭৭ শতাংশ), কলকাতা (৭৪ শতাংশ), হাওড়া (৭৪ শতাংশ), মালদহ (৭৫ শতাংশ), উত্তর ২৪ পরগনার (৭২ শতাংশ) মতো জেলায় কজের অগ্রগতি নিয়ে সম্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে।
রাজ্যের ৮২ হাজার ৯০৬টি স্কুলের ১ কোটি সাত লক্ষ পড়ুয়াকে দু’সেট করে ইউনিফর্ম দেওয়া হবে। এক সেট দেওয়া হয় এপ্রিল মাস নাগাদ। প্রথম সেট দেওয়া শেষ হলে দ্বিতীয় সেট দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়। এবছর অনেক আগে থেকে বৈঠক করে বছরের শুরুতেই পড়ুয়াদের এক সেট ইউনিফর্ম দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই হিসেবে এখনও পর্যন্ত প্রথম সেটের মোট ৪৫ শতাংশ ইউনিফর্ম তৈরির কাজ হয়েছে। সামনেই মার্চ। অতএব হাতে সময় খুবই কম। সেই কারণেই ইউনিফর্মের কাপড় কাটা এবং সেলাইয়ের কাজ চলছে এমন ইউনিটগুলিতে নিয়মিত পরিদর্শনে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। প্রত্যেক ১৫ দিন অন্তর কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে যাবেন ব্লকের আধিকারিকরা। জেলা স্তরের আধিকারিকরা মাসে এক বার পরিদর্শনে যাবেন।
একই সঙ্গে জেলায় জেলায় স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি ও ঋণের মাধ্যমে তাঁদের পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ সুনিশ্চিত করা নিয়েও পর্যালচনা বৈঠকে বসেছিল রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ মহল। সেখানে পেশ করা রিপোর্ট অনুযায়ী এ বছরের দেড় লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরির টার্গেটের মাত্র ৪৭.১৮ শতাংশ পূরণ হয়েছে। ঋণ প্রদান টার্গেটের ৭৫.৩১ শতাংশ এগিয়েছে। এই ক্ষেত্রেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।