নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: মধ্যমগ্রামে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের ঘটনায় এখনও অধরা অভিযুক্ত তারক দাস। পেশায় লরিচালক তারক পুলিসের নজর এড়াতেই দীর্ঘদিন ধরে নিজের ফোন ব্যবহার না করে অন্য মোবাইল সঙ্গে রাখছে। তবে, অন্য মোবাইল ব্যবহার করলেও মুহূর্তে মুহূর্তে সেটির লোকেশন বদল হচ্ছে। ফলে তাকে ধরতে কিছুটা হলেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পুলিসকে। তদন্তকারীদের দাবি, আশা করা যায়, এক সপ্তাহের মধ্যেই তারককে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
২৭ ফেব্রুয়ারি মধ্যমগ্রামের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে ফাঁকা বাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত কিশোরীর বন্ধু ও পড়শি যুবক তারক। মূলত তারকের ভাড়া বাড়িতেই অপকর্ম করা হয়। শুধু তাই নয়, গণধর্ষণের ভিডিও ক্যামেরাবন্দি করে রাখে অভিযুক্তরা। সেই ভিডিও দেখিয়ে কিশোরীকে ব্ল্যাকমেল করার পাশাপাশি নিজেদের জাহির করার চেষ্টা করে অভিযুক্তরা। এই ঘটনা জানাজানি হতেই শুক্রবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। অভিযুক্ত এক কিশোরকে ধরে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে চলে বেধড়ক মারধর। পরে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিস এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। জানা গিয়েছে, তাকে গ্রেপ্তার করে জুভেনাইল কোর্টে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়রা তারকের বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে দেন। সূত্রের খবর, লরিচালক তারক কখনও বাংলার একেবারে শেষ প্রান্তে, কখনও আবার ওড়িশায় থাকছে। তদন্তকারীদের দাবি, সে নিজের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করছে না। পাছে টাওয়ার লোকেশন থেকে তার গতিবিধি ধরা পড়ে। পুলিস জানিয়েছে, টেকনিক্যাল সহায়তা নিয়ে তারককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। সে কোন মালিকের লরি চালায়, তা জানার চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে বারাসত পুলিস জেলার এক কর্তা বলেন, ভিনরাজ্য বলতে ওড়িশার আশপাশে গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে অভিযুক্ত। সে সম্ভবত লরি নিয়েই এদিক-ওদিক করছে। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা স্বর্ণালী ঘোষ ও সৌম্য দাস বলেন, এর আগেও এই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে একই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিল তার এক নাবালক বন্ধু ও তারক। সেবারের মতো তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এবার ওদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে পুলিসকে। তাছাড়া তারক বিবাহিত। উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাত্রার জন্য পরিবার তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দেওয়া না হলে অনেকেই প্রশ্রয় পেয়ে যাবে। এই বাড়িতেই ঘটে গণধর্ষণ। -ফাইল চিত্র