পাইকারি বাজারে বিকোচ্ছে মাত্র ৫ টাকায়, বিঘার পর বিঘা জমিতে নষ্ট হচ্ছে টোম্যাটো
বর্তমান | ০৩ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: টোম্যাটোর ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। পাইকারি বাজারে টোম্যাটো বিকোচ্ছে পাঁচ টাকা কেজি দরে। মাঠ জুড়ে ফলন হওয়ায় উল্টে এখন বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। টোম্যাটো বিক্রি করে শ্রমিকের মজুরি পর্যন্ত উঠছে না। ফলে বিঘার পর বিঘা জমিতে পড়ে রয়েছে এই সব্জি। গাছেই নষ্ট হচ্ছে পাকা টোম্যাটো। বারাসত মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরলে এই দৃশ্যই ধরা পড়বে।
ফি বছর আমডাঙা, দত্তপুকুর, মধ্যমগ্রাম, বারাসত ২ নম্বর ব্লক, খিলকাপুর, বামনগাছি, হাড়োয়া, কদম্বগাছি সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় টোম্যাটো চাষ হয়। বর্ষার ধান কাটার পর নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে টোম্যাটোর চারা বসানো শুরু হয়। চারা গাছ বড় হয়ে ফল পাকতে সময় লাগে প্রায় দু’মাস। আড়াই থেকে তিন মাস ধরে টোম্যাটোর ফলন হয়। চাষের জন্য জমিতে রাসায়নিক, কীটনাশক স্প্রে করা হয়। টোম্যাটো চাষ কিছুটা হলেও ব্যয়বহুল। রয়েছে শ্রমিকের খরচও। এবছর খুবই ভালো ফলন হয়েছে। অন্যান্য বছর শীতের বিদায় লগ্নে টোম্যাটোর দাম বাড়ে। এবার উল্টো চিত্র। কার্যত ‘জলের দরে’ বিক্রি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পাইকারি বাজারে টোম্যাটো কেজি প্রতি পাঁচ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝে মাঝে দাম আরও কমে যায়। দত্তপুকুরের বাজিতপুরের আব্দুস সামাদ তাঁর দুই বিঘা জমিতে টোম্যাটো চাষ করেছেন। তাতে এক কুইন্টাল টোম্যাটো ফলেছে। বাজারদর তলানিতে নেমে যাওয়ায় ক্ষতি মুখে পড়েছেন তিনি। বললেন, বিঘা পিছু প্রায় তিন হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু, বাজারে যা দাম, তাতে উৎপাদন খরচও উঠছে না। আমডাঙার সন্তোষপুরের রাজীব ঘোষ বলেন, এখন টোম্যাটোর বাজারদরের তুলনায় খরচ অনেকটাই বেশি। ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের। খেত থেকে টোম্যাটো তোলার মতো অবস্থা নেই।
জেলার কৃষিদপ্তরের এক কর্তার কথায়, এবার ভালো আবহাওয়ার কারণে প্রচুর ফলন হয়েছে টোম্যাটোর। চাহিদার তুলনায় জোগান বেড়ে যাওয়ায় দাম পড়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে বারাসতের পাইকারি ব্যবসায়ী সমীর সেনগুপ্ত বলেন, এবার হাইব্রিড টোম্যাটোর ব্যাপক ফলন হয়েছে। তাই চার-পাঁচ টাকা কিলো দরে কিনে বারাসতের বিভিন্ন বাজারে সেই টোম্যাটো পাঠানো হচ্ছে। সেই টোম্যাটো খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮-১০ টাকা কেজি দরে।