অচেনা নম্বর থেকে অ্যাকাউন্টে ঢোকা ২,৪০০ টাকা ফেরাতে সটান থানায় হাজির মা ও মেয়ে
বর্তমান | ০৩ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: চার লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। সে টাকাও হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা। মহিলার দিশাহারা অবস্থা। এই অবস্থায় তাঁর ইউপিআই অ্যাকাউন্টে অচেনা নম্বর থেকে কিছু টাকা ঢোকে। কিন্তু অর্থাভাব সত্ত্বেও সততার সঙ্গে কোনও সমঝোতা করেননি মহিলা। টাকা ফিরিয়ে দিতে থানায় মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে থানায় পৌঁছে যান। এই ঘটনার কথা যাঁদেরই কানে গিয়েছে তাঁরাই শুনে হতবাক। আজকালকার দিনে এই ধরনের সততা কার্যত বিরল। সেই বিরল কাজেরই একটি দৃষ্টান্ত যেন সমাজকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন মধ্যবয়স্ক ওই মহিলা।
ভদ্রমহিলার নাম হীরামতি মণ্ডল। থাকেন নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার মহামায়াতলায়। তাঁর মেয়ে ডাক্তারি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হীরামতিদেবী ছোটখাট ব্যবসা করেন। চার লক্ষ টাকা হোম লোন নিয়েছিলেন। সেটি ব্যাঙ্কে ছিল। মেয়ের পড়াশোনার জন্য কিছু সাজেশন ও নোটস জোগাড় করতে গিয়ে প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে পুরো খেপে খেপে চার লক্ষ টাকাই খুইয়ে বসেন। এরই মধ্যে শুক্রবার তাঁর ইউপিআই অ্যাকাউন্টে ২ হাজার ৪০০ টাকা ক্রেডিট হয়। নম্বরটি অচেনা। তৎক্ষণাৎ ফোন করেন হীরামতি। টাকার প্রেরক মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। তাঁকে নরেন্দ্রপুর এসে টাকা নিয়ে যেতে অনুরোধ করেন হীরামতি এবং পুলিসকে ফেরত দিতে উদ্যোগ নিতে অনুরোধ জানান। হীরামতিদেবী বলেন, ‘লোনের টাকা খুইয়ে খুব সমস্যায় আছি। তার মধ্যেই আমার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকে। যাঁর টাকাই হোক না কেন, নিশ্চয়ই তাঁর প্রয়োজন রয়েছে। তাই থানায় গিয়েছিলাম। মুর্শিদাবাদের ওই ব্যক্তিকে টাকা নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি এখনও যোগাযোগ করেননি।’
চার মাস আগে হীরামতিদেবীর মেয়ে অনলাইনে ডাক্তারি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য নোটস এবং সাজেশন কিনতে গিয়ে প্রতারকদের খপ্পরে পড়েন। তারপর সাইবার থানায় অভিযোগ জানান। চার লক্ষ টাকার থেকে মাত্র ১২ হাজার টাকা এখনও পর্যন্ত ফেরত পেয়েছেন। -নিজস্ব চিত্র