অরূপকুমার পাল, ঝাড়গ্রাম
পরীক্ষা শুরুর আগেই চিন্তায় পড়ে গিয়েছে বন দপ্তর। আজ উচ্চ মাধ্যমিক শুরু। তার আগে, রবিবার ঝাড়গ্রামে ঢুকে পড়ল ২৬টি বুনো হাতির দল! শনিবার ঝাড়গ্রাম বনবিভাগে ছিল মোট পাঁচটি হাতি। রবিবার ওই হাতির সংখ্যা বেড়ে হয় ৩১টি। জেলা বন দপ্তরের পক্ষ থেকে কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
যে ২৬টি হাতি এ দিন ঢুকেছে তার মধ্যে মানিকপাড়ায় রয়েছে ২০টি এবং বেলপাহাড়ির চৌকিশোলে রয়েছে ছ’টি হাতি। আজ, সোমবার থেকে শুরু হয়ে উচ্চ মাধ্যমিক চলবে ১৮ মার্চ পর্যন্ত। এই ক’দিন পরীক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতায়াত সুনিশ্চিত করা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে বন দপ্তর।
মানিকপাড়া ও বেলপাহাড়ি এলাকায় হাতির সংখ্যা বেশি থাকায় বন দপ্তরের পক্ষ থেকে পরীক্ষার্থীদের যাত্রাপথে বিশেষ সুরক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুধু হাতি নয়, বাঘের আতঙ্কও রয়েছে বেলপাহাড়ির কিছু এলাকায়।
ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, ‘হাতি–উপদ্রুত এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। হাতি করিডর এলাকায় ড্রপগেট থাকবে। সেই সঙ্গে জঙ্গল রাস্তায় পরীক্ষার্থীদের জন্য বন দপ্তরের ঐরাবত গাড়ি এবং দপ্তরের অফিসার এবং কর্মীরা থাকবেন, যাতে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার সময় কোনও সমস্যায় পড়তে না হয় পরীক্ষার্থীদের।’
এ বারে ঝাড়গ্রাম জেলায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ হাজার ৭২৭ জন। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে কমপক্ষে দু’টি করে সিসি ক্যামেরা থাকছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার আগে পরীক্ষার্থীদের মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। যাতে কোনও পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক গ্যাজেট নিয়ে না প্রবেশ করতে পারে। এ ছাড়াও পরীক্ষা কেন্দ্রের একশো মিটার মধ্যে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রতিলিপি ও প্রিন্টের দোকান বন্ধ রাখতে হবে।
ঝাড়গ্রাম জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক) শক্তিভূষণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে জেলা প্রশাসন ও বন দপ্তরের সঙ্গে মিটিং হয়েছে।’ অন্য দিকে, লালগড়ের ঝিটকা বিটের অন্তর্গত বাঁদি গ্রামে গোয়ালঘরে এ দিন ভোরে হাতি ঢুকে একটি গোরুকে মেরে ফেলেছে বলে খবর।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়ির হাতিগেড়িয়ার জঙ্গলেও রবিবার সকাল থেকে একটি হাতি ঢুকে পড়ে। তা দেখে গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। বন দপ্তরের পক্ষ থেকে অবশ্য হাতির উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। তার পাশাপাশি গ্রামসাবীদেরও সতর্ক থাকতে মাইকিংও করা হচ্ছে। বনদপ্তর জানিয়েছে, হাতিটি যাতে গ্রামে ঢুকে না পারে সে জন্য বনকর্মীরা এলাকায় রয়েছেন।