এই সময়, আলিপুরদুয়ার: বলা হয়, খদ্দের লক্ষ্মী। সেই লক্ষ্মীদের ‘কৃপা’ পেতে প্রচুর পরিমাণে ঘাম ঝরাতে হয় ব্যবসায়ীদের। কিন্তু খদ্দের টানতে যদি মাত্রাতিরিক্ত চিৎকার করা হয়, তাহলে কি কার্যসিদ্ধি হয়? নাকি বিরক্ত হয়ে খদ্দেররা সেই পথ পরিহার করেন। খদ্দের টানাটানির লড়াইয়ে চিৎকারে অতিষ্ঠ হয়ে বনধ পালন করলেন একদল ব্যবসায়ী। অভিনব এই ঘটনাটি ঘটেছে আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়া শহরের বড় বাজারে।
বাজারের ওই গলি এলাকায় ‘আও আও’ গলি নামে পরিচিত। সেখানে মোট ৬৫টি দোকান রয়েছে। যার মধ্যে সিংহভাগ বস্ত্র বিপনি। অভিযোগ ওই গলির দক্ষিণ দিকের ঢোকার পথের তিনটি দোকানের মালিক ও কর্মচারীর ক্রেতা ধরতে তারস্বরে ‘আও আও’ বলে চিৎকার জুড়ে দিয়ে ক্রেতাদের কান ঝালাপালা করে দেন। তাদের ওই চিল চিৎকারের কারণে অন্য দোকানিদের মাছি মাড়তে হয়। পরিস্থিতি এতটাই সহ্যের বাইরে চলে যায় যে, ইদানিং ওই ‘আও আও’ গলিকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন ক্রেতারা। ফলে লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে বাকি দোকানিদের।
অভিযোগ, বারবার করে ওই তিন দোকানের মালিককে চিৎকার করতে বারণ করা হলেও তাঁরা সেই অনুরোধ কানে তোলেননি। তারই প্রতিবাদে বীরপাড়া বড়বজারের বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা রবিবার সাপ্তাহিক হাটের দিন অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যবসা বনধের ডাক দেন। সাটার নামিয়ে বন্ধ রাখা হয় দোকানগুলি। বীরপাড়া বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কৃষ্ণ গোপাল রাঠি বলেন, ‘ওই তিন দোকানদারের চিৎকারে অসহ্য হয়ে ক্রেতারা ওই গলিতে আর পা রাখেন না। ফলে আমাদের পদে পদে মার খেতে হচ্ছে। ব্যবসা কার্যত লাটে উঠেছে। তারই প্রতিবাদে আমরা হরতালে সামিল হয়েছি।’
অভিযুক্ত এক দোকানদার গোপাল আগরওয়াল বলেন, ‘দোকানের কর্মচারীদের বেতন জোগাড় করতে গিয়ে আমাদের ক্রেতা টানতে হয়। এর মধ্যে অন্যায় তো কিছু দেখছি না।’ শেষে বীরপাড়া থানার ওসি নয়ন দাসের মধ্যস্থতায় ছ’ঘণ্টা পর ব্যবসা বনধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। অভিযুক্ত দোকানদাররা মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন যে, তাঁরা আর ক্রেতাদের উত্ত্যক্ত করবেন না।